পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

করিয়া শঙ্কিতচিত্তে জীবন অতিবাহিত করিয়াছেন। আমরা বর্ব্বর শাসন করিয়াছি বটে, কিন্তু দেশ রক্ষা করিবার উপযুক্ত পাত্র নহি। ত্রিশূল লইয়া চালুক্য ও বর্দ্ধন রাজগণের বিজয়বাহিনীর সম্মুখীন হইতে যাইব না, ইহা নিশ্চয়। আপনি কান্যকুব্জে প্রত্যাবর্ত্তন করুন, দেবাদিদেবের শিরস্পর্শ করিয়া বলিতেছি, নীরবে, নিঃশব্দে, বিনা রক্তপাতে বিশাল কোশলরাজ্য আর্য্যাবর্ত্তরাজের পদানত হইবে, একজন মঠবাসীও বিপক্ষে দণ্ডায়মান হইবে না। গ্রামে গ্রামে মাণ্ডলিকগণ স্বাধীনতা হারাইয়া উত্তেজিত হইবে বটে, কিন্তু তাহারা আমাদিগের অবাধ্য হইবে না, আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধে কেহই হস্তোত্তোলন করিবে না। হর্ষবর্দ্ধন নির্ব্বিঘ্নে আটবিক প্রদেশ অধিকার করিবেন; কিন্তু দক্ষিণাপথে চালুক্য তাহা সহিবে না। কোশল হইতে বাতাপিপুর বহু যোজন পথ। হর্ষবর্দ্ধন কোশলে পদার্পণ করিলে সত্যাশ্রয় পুলকেশীর সিংহাসন কম্পিত হইবে। দূতরাজ! পূর্ব্বকালে বহু আর্য্যাবর্ত্তরাজগণ দক্ষিণাপথ জয় করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু দাক্ষিণাত্য বিজয়ের পথ এখন আর তত সুগম নাই। দক্ষিণাপথে নূতন বল সঞ্চারিত হইয়াছে, মঙ্গলেশের বংশধরগণ দুর্ব্বল হস্তে অসি ধারণ করে না। মহাত্মন্, কান্যকুব্জরাজপদে নিবেদন করিও, বিপদ আটবিক কোশলে নাই। বাতাপিপুরে ও নর্ম্মদা তীরে তাঁহাকে সাবধান হইতে বলিও। দেবাদিদেবের আদেশে আমরা নতশিরে হর্ষবর্দ্ধনের আদেশ পালন করিব; কিন্তু জানিয়া রাখিও, আর্য্যাবর্ত্তে সমুদ্রগুপ্তের বিজয়গাথার সমতুল কাহিনী আর কখনও শ্রুত হইবে না।”

 নতমস্তকে স্থাণ্বীশ্বররাজের দূত মঠসান্নিধ্য পরিত্যাগ করিল। বলিতে বিস্মৃত হইয়াছিলাম, মঠবাসিগণ প্রথমেই আমার দেহমার্জ্জনা করিয়া আমাকে শিবলিঙ্গের আকার প্রদান করিয়াছিল এবং প্রতিদিন

১৫৩