পাষাণের কথা
বোধ করি শুনিবে? আমার বিস্ময় বোধ হইয়াছিল গোশকট দেখিয়া, গোশকটের চক্র দেখিয়া, চক্রের প্রবর্ত্তন দেখিয়া। আমি ভাবিয়াছিলাম, কাষ্ঠনির্ম্মিত ক্ষুদ্র চক্র গুরুভার পাষাণের ভার বহন করিতে সমর্থ হইবে না; ভারবহনেও যদি সমর্থ হয়, শকট চলিতে সমর্থ হইবে না, নিশ্চয়ই কোন না কোন বিপদ ঘটবে। কিন্তু সামান্য চেষ্টাতেই শকট চলিল, চক্র প্রবর্ত্তিত হইতে লাগিল, ক্রমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে পথ অতিবাহিত হইতে লাগিল। সেরূপ গোশকট তোমরা এখন আর ব্যবহার কর না, দুই একজন মাত্র, তাহার পাষাণে খোদিত চিত্র দেখিয়া থাকিবে। তাহা বর্ত্তমান কালে প্রচলিত গোশকটের ন্যায় নহে। বর্ত্তমানের গোশকট দ্বিচক্র, কিন্তু সেগুলি চারি বা ততোধিক চক্রের উপরে স্থাপিত হইত। রথচক্র কোন স্থানে ভূমিতে প্রবেশ করিলে বা পথের কোন স্থান কর্দমাক্ত থাকিলে হস্তিবৃন্দ আসিয়া সাহায্য করিত, শুণ্ডে রথচক্র মুক্ত করিত, কখন বা ভারবাহী গোসমূহকে সাহায্য করিত। এইরূপে গোশকটে সহস্রাধিক শিলাখণ্ড নূতন পথ ধরিয়া শতাধিক যোজন পথ আনীত হইল। শিলাবাহী শকট সমূহ যেদিন নগরের প্রান্তে উপস্থিত হইয়াছিল, সে দিন নগরে মহোৎসব আরম্ভ হইয়াছিল। দলে দলে নগরবাসিগণ আসিয়া আমাদিগকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। অনেকে এরূপ দীর্ঘকায় প্রস্তর পূর্ব্বে কখনও দেখে নাই; তাহারা বিস্ময় প্রকাশ করিতে লাগিল। ক্রমে শকটশ্রেণী নগরপ্রাকার অতিক্রম করিয়া নগরে প্রবেশ করিল। ক্রমে পথরোধ করিয়া ফেলিল। মুষ্টিমেয় রাজপুরুষের চেষ্টায় পথ মুক্ত হইল না; তখন অতি বৃদ্ধ, লোলচর্ম্ম, মুণ্ডিতশীর্ষ কাষায়বস্ত্র-পরিহিত একজন মনুষ্য আসিয়া ভগবান বুদ্ধের নাম উচ্চারণ করিয়া পথ মুক্ত করিতে অনুরোধ করিলেন। বৃদ্ধের ও
১০