পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৩০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

পাষাণের কথা

স্বর্গগত চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের শ্বশুরবংশের অধীনে বাহ্লীক ও কপিশার শাসনকর্ত্তা ছিলেন। যে আন্তিয়োক সপ্তসিন্ধু বিজয় করিতে আসিয়া সৌভাগ্যসেনের নিকট হইতে পঞ্চশত সংখ্যক হস্তিযূথ প্রাপ্ত হইয়া আপনাকে সৌভাগ্যবান মনে করিয়াছিলেন, তাঁহারই সময়ে ঐরাণে পারদগণ ও বাহ্লীকে বিদ্রোহী যবনগণ স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়াছিল। ক্রমে শক জাতির তাড়নায় ইহারা পূর্ব্বদিকে আসিতে বাধ্য হইয়াছে। বাহ্লীকের যবনরাজ্যের অভ্যুত্থানের সহিত গান্ধারে ও উদ্যানে মৌর্য্যসাম্রাজ্যের মর্য্যাদাহানি আরব্ধ হইয়াছে। ইহাই মৌর্য্যরাজবংশের ও সদ্ধর্ম্মের অবনতির সূত্রপাত। বাল্যে আমি হিরণ্যবহা তীরে পাষাণ-নির্ম্মিত কুক্কুটপাদবিহারে বাস করিতাম। তখন শ্রমণাচার্য্যগণ ঐরাণ, বাবিরুষ, মিশর ও যবন দ্বীপপুঞ্জে পরিভ্রমণ করিয়া আসিয়াছেন; প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য জগতে সদ্ধর্ম্মের মহিমা ঘোষিত হইয়াছে। তখন নগরে প্রতিদিন মহোৎসব হইত। সদ্ধর্ম্মের সেরূপ উন্নতির দিন আর বোধ হয় আসিবে না। ধর্ম্মেৱ এরূপ দুরবস্থা চিরকাল ছিল না, তাহাই প্রমাণ করিবার জন্য আমি এই শতবর্ষের পুরাতন কাহিনীর পুনরবতারণা করিতেছি। তখন শ্রমণ দেখিলে আবালবৃদ্ধ, উচ্চ-নীচ সকলেই নতশীর্ষ হইত। পশ্চিমে নগরহারে, পুরুষপুর ও তক্ষশিলা, দক্ষিণে উজ্জয়িনী, বিদিশা, ও পূর্ব্বে চম্পা, পুলিন্দ প্রভৃতি স্থান হইতে শিক্ষার্থিগণ পাটলিপুত্রে আসিত। আমি যৌবনে তাহাদিগের সহিত কপোতিক, পারাবত, কুক্কুটপাদ, মহাকাশ্যপীয়, মহাসাঙ্ঘিক প্রভৃতি বিহারে একত্র শিক্ষালাভ করিয়াছি। তখন শ্রমণ ও ভিক্ষুগণ প্রবাসে যাইতে হইলে অন্ধকারের আশ্রয়ে বনান্তরালের পথ গ্রহণ করিতেন না; পরন্তু বঙ্গ হইতে সিন্ধু পর্য্যন্ত রাজপথ বৌদ্ধগণের ব্যবহার্য্য ছিল—ইহা কল্পনা

১৮