নহে। যে ব্রাহ্মণগণ ধর্ম্মাশোকের শাসনকালে যজ্ঞকালীন পশুবধ হইতে রাজভয়ে বিরত হইয়াছিল, যাহাদিগকে প্রিয়দর্শী দেবপদচ্যুত করিয়াছিলেন, তাহারা ক্রমশঃ সোমশর্ম্মা, শতধন্বা প্রভৃতি দুর্ব্বল রাজগণের রাজত্বে পুনরায় মস্তকোত্তলন করিতে লাগিল। মৌর্য্যসাম্রাজ্য ধ্বংসের অব্যবহিত পূর্ব্বে সৈন্যমধ্যে অহিচ্ছত্রবাসী মিত্রোপাধিধারী সুঙ্গবংশ অত্যন্ত প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। অন্তর্ব্বেদীর উত্তরস্থ প্রাচীন অহিচ্ছত্রনগরী ব্রাহ্মণপ্রধান স্থান। পুরুষ পরম্পরায় শুনিয়া আসিতেছি যে, অহিচ্ছত্র নগরে বা মণ্ডলে বৈদিক ব্রাহ্মণগণের প্রভাব অক্ষুণ্ণ, তথায় তথাগতের ধর্ম্মের স্থান নাই। সুঙ্গবংশীয়গণ ব্রাহ্মণগণের শিষ্য ও সদ্ধর্ম্মের বিরোধী। যেদিন পাটলীপুত্রনগরপ্রাকারের বাহিরে বিশ্বাসঘাতক পুষ্যমিত্র বলদর্শন ব্যপদেশে শেষ মৌর্য্যরাজ বৃহদ্রথকে সংহার করিল, প্রাচীন ভিক্ষু বা যতিমাত্রই সেই দিন বলিয়াছিলেন যে, এতদিনে সদ্ধর্ম্মের শুভদিনের অবসান ও দুর্দ্দিনের সূচনা হইল। কে জানিত দশ বৎসরের মধ্যে মৌর্য্য সাম্রাজ্যের সহিত মাগধ সঙ্ঘেরও বিলোপ হইবে? বৃহদ্রথের মৃত্যুর অত্যল্পকাল মধ্যে দুষ্ট ব্রাহ্মণগণের প্ররোচনায় নাগরিকগণ ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল। যে নাগরিকগণের উন্নতির ও শিক্ষার জন্য আমরা জীবন অতিবাহিত করিয়াছি, সেই কৃতঘ্নগণই আমাদিগের ধ্বংসসাধনে তৎপর হইল। যে কারণে আমি মাতৃভূমি ত্যাগ করিয়া, পুণ্যক্ষেত্র মগধ ত্যাগ করিয়া মহাকোশলের অরণ্য মধ্যে তোমাদিগের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছি, সেই কারণেই নগরবাসী জনৈক ভিক্ষু তথাগতের ভিক্ষাপাত্র লইয়া পুরুষপুর নগরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। শাক্যরাজপুত্রের উষ্ণীষ কোথায় গিয়াছে তাহার সন্ধান পাওয়া যায় না। সযত্ন সংগৃহীত বুদ্ধদেবের ভস্মরাশি পাটলীপুত্রের রাজপথের ধূলিরাশির সহিত মিশ্রিত
পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৩১
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পাষাণের কথা
১৯