পূর্ব্বে কোন জাতি এতদূর দক্ষতার সহিত পাষাণে জীবিত মনুষ্যের রূপাকৃতি গঠনে সমর্থ হয়েন নাই। মিজ্রাইম্ দেশবাসিগণও মূর্ত্তিগঠনে এতদূর কৃতকার্য্য হইতে পারেন নাই। কিলিকীয় মাখেতা কহিতেন যে, যবনদ্বীপপুঞ্জ ও মিজ্রাইম্ দেশের মধ্যবর্ত্তী সমুদ্রকূলে কিলিকীয়া দেশে তাঁহার বাস। যৌবনে তিনি মিজ্রাইম্বাসী ও আদিম যবন অধিবাসী উভয় জাতিই দেখিয়াছেন; কারণ, স্থলপথে যে সার্থবাহগণ নিগমবদ্ধ হইয়া উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যব্যপদেশে গমনাগমন করিতেন, তাঁহারা অধিকাংশ সময়েই তাঁহার জন্মভূমির মধ্য দিয়া গমন করিতেন, এতদ্ব্যতীত সহস্র সহস্র যবন কিলিকীয়া দেশে বাস করিয়াছিল। তাঁহার পূর্ব্বপুরুষগণও তাহার মধ্যে অন্যতম। সুতরাং বাহ্লীক বা গান্ধারবাসী যবন অপেক্ষা আদিম যবনদেশবাসী স্বজাতিগণ সম্বন্ধে তাঁহার অভিজ্ঞতা অপেক্ষাকৃত অধিক। তিনি শুনিয়াছেন যে, অলিকসুন্দরের সহযাত্রিগণ স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া যে বিবরণ প্রদান করিয়াছেন তাহার অধিকাংশ অমূলক। তিনি দেশে শুনিয়াছিলেন যে, ভারতবাসিরা প্রস্তর খোদনে নিপুণতার অভাবে দারুময় গৃহে বাস করে ও গৃহসমূহ কারুকার্য্যে শোভিত করে; কিন্তু তিনি এ দেশে আসিয়া দেখিয়াছেন যে, এ দেশে বহু প্রাচীন প্রস্তরনির্ম্মিত গৃহনগরাদি বিদ্যমান আছে ও ভারতবাসিগণ প্রস্তর-তক্ষণে বিলক্ষণ নিপুণ। পঞ্চনদবাসিগণ কাষ্ঠখোদনে অত্যন্ত নিপুণ এবং প্রস্তরানভাব সত্ত্বেও খোদিত কারুকার্য্যময় কাষ্ঠনির্ম্মিত গৃহ বহুল পরিমাণে ব্যবহার করিয়া থাকে। নাগরিকগণ কহিলেন যে, পারসিক অধিকার কালে বাহ্লীক হইতে পঞ্চনদ পর্য্যন্ত ভূখণ্ডে ঐরাণদেশীয় ভাস্কর্য্যের সর্ব্বোৎকৃষ্ট অংশ গৃহীত হইয়াছে ও ক্রমে সমগ্র ভারতে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়াছে। যে স্তূপ নির্ম্মিত হইতেছে তাহার চারিটি তোরণ স্তম্ভের শীর্ষদেশে যে সিংহচতুষ্টয়
পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৩৯
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পাষাণের কথা
২৭