পাষাণের কথা
যথাস্থানে স্থাপনের ব্যয়ভার বহন করিয়াছিলেন; কিন্তু সুঙ্গরাজগণের ভয়ে স্বীয় নাম প্রকাশ করেন নাই। চাপদেবা-প্রদত্ত স্তম্ভের একপার্শ্বে হস্তিত্রয়ের পৃষ্ঠে স্থাপিত পাদপীঠের উপর গরুড়ধ্বজধারী একটি অশ্বারোহীর মূর্ত্তি; অপর পার্শ্বে গণযুগলবাহিত পাদপীঠের উপর তিনটি হস্তী; ইহার মধ্যে মধ্যমটি সর্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ। প্রত্যেক হস্তীর স্কন্ধে অঙ্কুশহস্তে হস্তিপক উপবিষ্ট। প্রত্যেক স্তম্ভের উপরিভাগে একটি অর্দ্ধবৃত্ত অঙ্কিত ও উহার মধ্যে একটি প্রস্ফুটিত পদ্মের অর্দ্ধভাগ। সাধারণতঃ তোরণের পার্শ্বে বেষ্টনের প্রথম স্তম্ভ এইরূপে চিত্রিত হইত। অপর স্তম্ভগুলিতে প্রত্যেক পার্শ্বে, ঊর্দ্ধে একটি ও নিম্নে একটি অর্দ্ধবৃত্ত এরং মধ্যভাগে একটি পূর্ণবৃত্ত অঙ্কিত হইত; ইহার মধ্যে কোনটিতে চিত্র, কোনটিতে প্রস্ফুটিত বা প্রস্ফুটনোন্মুখ পদ্ম খোদিত হইয়াছিল। ঊর্দ্ধের অর্দ্ধবৃত্ত ও মধ্যস্থলের পূর্ণবৃত্তের অন্তঃস্থ স্থানে কোনটিতে প্রস্ফুটিত পদ্মের উপর নৃত্যশীলা অপ্সরা, কোনটিতে সনাল উৎপল, কোনটিতে সফল আম্রপল্লব, কোনটিতে বা পুষ্পমাল্য খোদিত হইয়াছিল। স্তম্ভযুগলের ব্যবধানে তিনটি করিয়া সূচি স্থাপিত হইয়াছিল; তিনটি সূচি প্রতি স্তম্ভযুগলকে পরস্পর সংলগ্ন করিত। স্তম্ভের পার্শ্ব সূচিবৎ বিদ্ধ করিয়া থাকিত বলিয়া বোধ হয় ভাস্করগণ পাষাণময় বেষ্টনের এই অংশের “সূচি” নামকরণ করিয়াছিলেন। প্রত্যেক সূচির পার্শ্বে এক একটি পূর্ণবৃত্ত অঙ্কিত থাকিত; সাধারণতঃ সূচিগাত্রে বৃত্তগুলিতে প্রস্ফুটিত পদ্ম খোদিত ছিল, কিন্তু অতি অল্পসংখ্যক সূচিতে নানাবিধ চিত্রও ছিল।
তাহার পর আলম্বন। উত্তর ভারতবাসী কোন্ মহাপুরুষ যে এই আলম্বনের ব্যয় দিয়াছিলেন, তাহা জানিতে পারি নাই; কিন্তু আলম্বনটি সর্ব্বাপেক্ষা সুন্দর হইয়াছিল। স্তূপবেষ্টনীর সমুদায় স্তম্ভের ও তোরণের
৩৪