পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৪৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

পাষাণের কখা

মধ্যভাগে প্রবেশ করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল; জনতা বর্দ্ধিত হওয়ায় কোষ্ঠপালকে সংবাদ দিয়া রক্ষিসংখ্যা বৃদ্ধি করিতে হইল। তখন হতাশ হইয়া সেই জনসংঙ্ঘ বেষ্টনীর বহির্ভাগে দণ্ডায়মান রহিল। উৎসাহে ও দুর্দ্দমনীয় বাসনায় মত্ত হইয়া তাহারা তাহাদিগের বর্ষীয়ান্ ধর্ম্মযাজকের আগমন লক্ষ্য করে নাই। আজ তিনিও যেন নূতন বলে বলীয়ান্ হইয়া নগর হইতে স্তূপবেষ্টন পর্য্যন্ত দীর্ঘ পথ এই বিশাল জনতা ভেদ করিয়া আসিয়াছেন। আজ তাঁহার জন্য জনসমুদ্রের মধ্য দিয়া পথ উন্মুক্ত হয় নাই। তাঁহার ঈষণ্ণমিত দেহ দেখিয়া যদি একজন সসম্ভ্রমে অপসৃত হইয়াছে, তখনই দশজন দশদিক্ হইতে সেই স্থান অধিকারের চেষ্টা করিয়াছে। তাঁহার ক্ষীণ দেহ জনসঙ্ঘের পেষণে বহুবার পীড়িত হইয়াছে। তাঁহাকে দেখিয়া যদি কেহ সলজ্জভাবে সরিয়া যাইবার উদ্যম করিয়াছে, তখনই সে বুঝিয়াছে, সে আশা বৃথা; কারণ, তাহার পরক্ষণেই অপরে সে স্থান অধিকার করিয়াছে। সকল বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করিয়া হস্তী ও উষ্ট্রের আস্ফালন ও রথচক্রের ঘূর্ণন উপেক্ষা করিয়া ধূলিধূসরিত দেহে তিনি রক্ষিগণের মধ্যে আসিয়া উপস্থিত হইলেন; আসিয়া দেখিলেন, রাজা তখনও আইসেন নাই, যবনচতুষ্টয় তাঁহার জন্য ধীরভাবে অপেক্ষা করিতেছেন। তাহা দেখিয়া তিনিও বেষ্টনীর বহির্ভাগে অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। রাজাও তাঁহারই অবস্থায় পতিত হইয়াছিলেন। তাঁহার চতুরশ্বযোজিত রথ স্তূপবেষ্টনী পর্য্যন্ত আসিতে পথ পায় নাই; নগরদ্বার হইতে বাহির হইয়াই তাঁহাকে রথ হইতে অবতরণ করিতে হইয়াছে। জনতার মধ্যে অনেকেই তাঁহাকে সবিনয়ে বেষ্টনীর দ্বার উন্মুক্ত করিবার জন্য অনুরোধ করিয়াছে; অনুরোধ উপরোধ অতিক্রম করিয়া, ক্ষিপ্তপ্রায় জনতাকে শান্ত করিয়া নগ্নপদে রাজা বেষ্টনীর প্রবেশপথে উপস্থিত হইলেন। তখন

৩৬