এত চেষ্টা সত্ত্বেও রাক্ষসের নাসারন্ধ্রের লোম উৎপাটিত হইতেছে না। কোন স্তম্ভে অশ্বপৃষ্ঠে আরূঢ় স্ত্রী বা পুরুষ, গরুড় বা কিন্নরধ্বজ হস্তে লইয়া ধীর পদক্ষেপে গমন করিতেছে। গরুড় বা কিন্নরধ্বজ বিস্ময়ের বিষয় নহে। এখন যেমন কিরাত দেশের প্রান্তে বৌদ্ধতীর্থে অসংখ্য বংশদণ্ডাগ্রে শ্বেত, কৃষ্ণ, নীল, পীত, রক্ত নানা বর্ণের কেতন দেখিত্তে পাও, তেমনই প্রাচীন যুগে মন্দির বা বিহার হিন্দু, বৌদ্ধ বা জৈন নির্ব্বিশেষে নানাবিধ পতাকাশোভিত ধ্বজসমূহ পুণ্যার্থিগণকর্ত্তৃক স্থাপিত হইত। সমগ্র আর্য্যাবর্ত্তে মহারাজ ধর্ম্মাশোক স্থাপিত সিংহ, হস্তী ও বৃষধারী শিলাস্তম্ভ দেখিয়াছ, উহাও ধ্বজমাত্র। সামান্য তীর্থযাত্রীর বংশদণ্ডের পরিবর্তে আসমুদ্রক্ষিতীশ সুচিক্কণ, সমুজ্জ্বল, মসৃণ শিলাস্তম্ভ প্রোথিত করিয়া পুণ্যস্থানে কাষায় কেতন উড্ডীন করিয়াছিলেন। ধর্ম্মলিপি খোদিত হইবার পূর্ব্বে উপগুপ্তের দীক্ষায় দীক্ষিত হইয়া অশোক আর্য্যাবর্ত্তে যে পুণ্যযাত্রা করিয়াছিলেন সেই সময়ে পুণ্যস্থান মাত্রেই ধর্ম্মাশোকের সিংহ, হস্তী বা বৃষধ্বজ স্থাপিত হইয়ছিল। কবে কোন যবন আসিয়া, ব্রাহ্মণগণের উপাস্য কোন দেবতার পদপ্রান্তে, আর্য্যাবর্ত্তের কোন প্রান্তে, গরুড়ধ্বজ প্রতিষ্ঠা করিয়াছিল; সহস্র সহস্র বর্ষ পরে তাঁহার পুণ্যকর্ম্মের লেখ, সিন্দূর লেপন মুক্ত হইয়া পুনরায় নরলোচনের গোচরীভূত হইয়াছে! তাহা দেখিয়া বা শুনিয়া বিস্মিত হইও না। যদি ব্রাহ্মণের উপাস্য বাসুদেবের উদ্দেশে যবন তীর্থযাত্রী কর্ত্তৃক একটি পাষাণময় গরুড়ধ্বজ নির্ম্মিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে আর্য্যাবর্ত্তে সদ্ধর্ম্মের পঞ্চবিংশ শতাব্দীব্যাপী জীবনে যে লক্ষ লক্ষ কেতনবাহী ধ্বজ স্থাপিত হইয়াছিল, তাহাও দেখিতে পাইবে। পুণ্যস্থানে অনুসন্ধান কর, দেখিতে পাইবে, রাজ-
৫১