পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

মহিমা ঘোষণা করিতেছে। উৎসবের জন্য শৌণ্ডিকগণ বোধ হয় কদম্ববৃক্ষের কাণ্ড পর্য্যন্ত বকযন্ত্রে নিক্ষিপ্ত করিয়াছিল। কোন স্থানে কোন বিলাসী নাগরিকের বিশাল পটমণ্ডপ স্থাপিত হইয়াছে। উৎসবের দিবসে নৃত্যগীত ও হাস্য কোলাহলে বস্ত্রাবাস পরিপূরিত হইয়া উঠিয়াছে, সুরার স্রোত প্রবাহিত হইয়াছে। পথে দলে দলে নাগরিক ও নাগরিকগণ অর্চ্চনান্তে স্নানার্থ নদীতীরে চলিয়াছে। নদীবক্ষে ক্ষুদ্র বৃহৎ নানাবিধ জলযান নানাভরণভূষিত হইয়া মহোৎসবের পরিচয় প্রদান করিতেছে। নদীবক্ষে উৎসবের স্রোত সমভাবে প্রবাহিত, নদীতীর্থের পথ নাগরিকগণের পাদপেষণে কর্দ্দমাক্ত হইয়া উঠিয়াছে, ক্ষুদ্র নদীর জল বহু লোকের সমাগমে মলিন হইয়া উঠিয়াছে। নদীবক্ষেও ক্ষেপনী হস্তে উৎসববিহ্বল তরুণ ও তরুণী, বৃদ্ধ ও বালক। নদীর সান্নিধ্যে বৃক্ষতলে কোন স্থানে চীবরধারী ভিক্ষুগণ প্রব্রজ্যা প্রদান করিতেছেন, মুণ্ডিতশীর্ষ উপাসক ও উপাসিকগণ “বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি, ধর্ম্মং শরণং গচ্ছামি” ইত্যদি মন্ত্র পাঠ করিয়া আজীবন সঞ্চিত কলুষরাশি ক্ষয়ের চেষ্টা করিতেছেন। কোন স্থানে স্থবির ও ত্রৈপিটকোপাধ্যায়গণ অভিধর্ম্মকোষব্যাখ্যা ও অভিধর্ম্মবিভাষাশাস্ত্রের কূটতর্ক লইয়া ব্যস্ত হইয়াছেন। এইরূপে দিবসের তৃতীয় প্রহর অতীত হইল। তৃতীয় ও চতুর্থ প্রহরের মধ্যে উৎসব ক্ষণেকের জন্য স্থগিত হইল, সকলেই আহারের চেষ্টায় ব্যস্ত হইল। বৃহৎ পটমগুপে রাজা ও রাজ্ঞীগণ সমবেত ভিক্ষুসঙ্ঘের আহারের আয়োজন করিয়াছেন। মর্য্যাদা নির্ব্বিশেষে ভিক্ষু ও স্থবিরগণ ভোজনে উপবিষ্ট হইয়াছেন, রাজা, বৃদ্ধ মহাস্থবির ও নবাগত শ্বেতাঙ্গপুরুষ তখনও অভুক্ত অবস্থায় আছেন, তাঁহারা ভোজনব্যাপার পর্য্যবেক্ষণ করিতেছেন। ভিক্ষুগণের আহার

৫৭