পাষাণের কথা
অনায়াসলভ্য পুষ্পরাশি ভারে ভারে আনিতে পারে নাই। প্রাচীন আটবিক নগরবাসিগণের বংশধরেরা দূরে পর্ব্বতশিখরে দণ্ডায়মান হইয়া উৎসব দর্শন করিয়াছিল। তাহারা উৎসবক্ষেত্রের যোজনের মধ্যেও আসিতে সাহসী হয় নাই। এমন কি মেষচর্ম্ম পরিহিত যে পথপ্রদর্শক গভীর বন ভেদ করিয়া শকরাজপুরুষকে আমাদের সমীপে আনয়ন করিয়া ছিল, তাহাকে পর্য্যন্ত আসিতে দেওয়া হয় নাই। ক্ষুদ্র ভিক্ষুসঙ্ঘে শুনিতাম যে, চীনযুদ্ধের জন্য সমবেত বিশাল বাহিনী লইয়া সম্রাট তীর্থযাত্রায় আসিতেছেন, পঞ্চলক্ষ পদাতিক ও অশ্বারোহী সেনা সমভিব্যাহারে তিনি মথুরা হইতে যাত্রা করিয়াছেন। এই পঞ্চ লক্ষের সহিত সাম্রাজ্যের প্রধান প্রাধান রাজপুরুষ ও সর্ব্বধর্ম্মাবলম্বী সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণ আসিতেছেন, তাঁহাদিগের যাত্রার ব্যবস্থা ও শুশ্রূষার জন্য সমগ্র আর্য্যাবর্ত্তে আয়োজন হইয়াছে। সেই পঞ্চলক্ষের মধ্যে শকদ্বীপ, বাহ্লীক, কপিশা, গান্ধার, উরস, কাশ্মীর, টক্ক, ত্রিগর্ত্ত, উদ্যান, মরু, জালন্ধর, মায়াপুর, সুরসেন, মৎস্য, অহিচ্ছত্র, কান্যকুব্জ, বারানসী, করুষ, কীকট, তীরভূক্তি, এমন কি রাঢ় পর্য্যন্ত সর্ব্বদেশবাসী সৈনিক আছে। এতদ্ব্যতীত সকোণ শিরস্ত্রাণধারী দুর্দ্ধর্ষ শকসৈন্য আছে; কুষাণবংশের অভ্যুত্থানের সহিত দলে দলে আর্য্যাবর্ত্তবাসী যবন আত্মাভিমান বিসর্জ্জন দিয়া শকসম্রাটের বেতনভোগী হইয়াছে, চর্ম্মপরিহিত শক অশ্বারোহিগণের আক্রমনের তীব্রবেগ সহ্য করিতে না পারিয়া কাশ্মীরের উত্তর সীমান্তবাসী তুষারধবল দরদজাতি শকসম্রাটের বশীভূত হইয়াছে, দলে দলে তাহারাও সৈন্যশ্রেণীভুক্ত হইয়াছে। দরদগণের ন্যায় কষ্টসহিষ্ণু জাতি আর নাই, সারমেয়ের ন্যায় তাহাদিগের দৃষ্টিশক্তি ও ঘ্রাণশক্তি অতি প্রবলা, তাহারা ঘ্রাণে অনুভব করিতে পারে, নিকটে শত্রু আছে কিনা; তৃণমণ্ডিত পথে মনুষ্যের পদাঙ্ক অনুসরণ
৭৮