পাষাণের কথা
হইতে পুষ্প আহরণ করিতেছেন, দেবীর মস্তকোপরি চম্পক বৃক্ষের শাখায় দোদুল্যমান কাচমণ্ডিত দীপাধার, তোমরা মথুরার স্তূপবেষ্টনীর স্তম্ভে এইরূপ মূর্ত্তি নিশ্চয়ই দেখিয়া থাকিবে। দারুময় নগরে প্রতি রাত্রিতে এইরূপ লক্ষ লক্ষ দীপধার ব্যবহৃত হইয়াছিল। কল্পনা করিয়া রাখ কত অর্থব্যয়ে, কত পরিশ্রমে তীর্থযাত্রিগণের আবাস নির্ম্মিত হইয়াছিল। সে স্বপ্নের কথা, স্বপ্নের ন্যায় চলিয়া গিয়াছে। আমি এখন যেরূপ ভাবিতেছি, নগর-তোরণের ধ্বংসাবশিষ্ট পাষাণগুলিও বোধ হয় সেইরূপই ভাবিয়ছিল।
সম্রাট আসিতেছেন। উত্তরে উপত্যকার প্রান্তে মেঘের ন্যায় অশ্বারোহীর শ্রেণী দেখা দিয়াছে, মেঘের পর মেঘ উত্তর প্রান্তে দৃষ্ট হইয়াছে, ক্রমে নিকটে আসিয়া শ্রেণীবদ্ধ অশ্বারোহী সৈন্যে পরিণত হইয়াছে। সূর্য্যালোকে প্রতিভাসিত হইয়া তাহাদিগের উজ্জ্বল শিরস্ত্রাণগুলি দূরে তারকামালার ন্যায় প্রতীয়মান হইতেছিল, কিন্তু নিকটে আসিয়া মধ্যাহ্ন সূর্য্যের ন্যায় দেখাইতেছে। ইহারা শকজাতীয় অশ্বারোহী। যে অনুন্নতনাসা মেষচর্ম্মাচ্ছাদিত অশ্বারোহিগণ নগর ধ্বংস করিয়াছিল, ইহারা সেরূপ নহে। ইহাদিগের বর্ণ অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল ও অবয়বসমূহ সুগঠিত। সমস্ত অশ্বারোহীই রজতশুভ্র বর্ম্মাচ্ছাদিত। তাহাদিগের এক হস্তে ভল্ল ও অপর হস্তে বল্গা, কটিদেশে ক্ষুদ্র অসি, এতদ্ব্যতীত কাহারও কোন রূপ অস্ত্র ছিল না। শুনিয়াছি, সুদূর প্রতীচ্যে রোমক সৈনিকগণ এইরূপে সজ্জিত হইত। সর্পের ন্যায় অশ্বারোহিশ্রেণী আসিয়া স্তূপ বেষ্টন করিল। প্রভাত হইতে অনুমান দ্বিপ্রহরকাল পর্য্যন্ত কেবল অশ্বারোহী সৈন্যই আসিয়াছিল। তাহাদিগের অস্ত্রশস্ত্রের বা বেশভূষার কোনই পার্থক্য ছিল না। অশ্বারোহিশ্রেণীর পর
৮২