পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুঃখের সঙ্গেই বলিল, ভেবেছিলাম বাপ্লের বাড়ি গিয়ে কমাস থাকিব, তা আর হবে না বুঝতে পারছি । کسی" আশ্চৰ্য চরিত্র কুসুমের! এতিক্ষণে শশী একটু লজ্জা বোধ করিল! সেদিন রহস্য সৃষ্টি করে নাই কুহুম। ওইরকম বাকা তার মনের কথা বলিবার ধরন । সে কিছু বুঝিবে না, কিছু মানিবে না । কেন ভাবিয়া মরে শশী ? সেদিন কুসুমের ব্যবহারের মানে ছিল শুধু এই । আর এক বিষয়ে শশী বিস্মিত হয় ! সেদিন সে গ্রাম ছাড়িয়া চলিয়া যাইবার কথা বলিয়াছিল। সে সম্বন্ধে-কুসুমের কি বলিবার কিছু নাই ? কথাটা সে বিশ্বাস্ত্র করে নাই নাকি ? বাজিতপুরের ঘাটে নৌকা বাধিয়া শশী নামিয়া গেল। গোবর্ধনকে বলিয়া দিল, কুসুমকে বাপের বাড়ি পৌছাইয়া দিয়া বিকালে যেন নৌকা আনিয়া श्च८b i८२ ।। wr বাজিতপুরের সিনিয়র উকিল রামতারণবাবুর কাছে মোকদ্দমা উপলক্ষে শশীকে মাঝে মাঝে আসিতে হয়, এবারেও দেখা করিবার জন্য দিন তিনেক, আগে তঁার একখানা-চিঠি পাইয়া শশীর কোন অসাধারণ প্ৰত্যাশা জাগে নাই । ব্যাপার শুনিয়া খানিকক্ষণ তাই সে বিস্ময়ে হতবাক হইয়া রহিল । দশটা গ্ৰামকে বিচলিত ও উত্তেজিত করিয়া যাদব মরিয়াছেন, কিন্তু আরও য়ে চমক তিনি সঞ্চিত করিয়া রাখিয়া গিয়াছেন। সকলের জন্য, শশী তো তাহা ভাবিতেও পারে নাই । গ্রামে একটি হাসপাতাল করার জন্য যা-কিছু ছিল যাদবের সব তিনি দান করিয়া গিয়াছেন। ব্যবস্থার ভার শশীর, দায়িত্ব শশীর । কি ছিল যাদবের ? হাসপাতাল কাবুর উপযুক্ত দান হিসাবে অত্যধিক কিছু নয়, যাদবের দান হিসাবে বিস্ময়কর, প্রচুর । হাজার পনের টাকার কোম্পানির কাগজ, বার-তের হাজার নাগাদ, আর যেখানে যাদব বাস করিতেন। সেই বাড়ি ও জমি । এত টাকা ছিল যাদবের ? পুরানো ভাঙা । বাড়িটার শুষ্ঠাতসেঁতে ঘরে যাদব ও পাগলাদিদির সাদাসিধে। ঘরকন্নার ছবি শশীর মনে পড়িতে লাগিল, কী-খানা বাসন, মাটির হাড়ি-কলসী, কাঠের জীৰ্ণ সিন্দুক গৃহসজ্জার অভাবজনিত দীনতা । তাও অপুর্ব ছিল সত্য, সে ঘরের পরিচ্ছনষ্ঠা, ধুপগন্ধী শান্ত আবহাওয়া চিরদিন শশীকে অভিভূত করিয়াছে, কিন্তু টাকার ছাপ তো কোথাও ছিল মা সেই গৃহী-সন্ন্যাসীর গৃহে ! স্বামীতারণের বয়স হইয়াছে। আদালতে যাওয়া তিনি অনেক কমাইয়া এফেলিয়াছেন । জোর চারটেয় উঠিয়া আহ্নিক করিতে বসেন, মানুষটা ধামিক ৷ S 8vo.