পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শশী একটু হাসিল, কিছু বলিল না । কুসুমের এ-রকম সরল মিথ্যাভাষণ সে মাঝে মাঝে লক্ষ্য করিয়াছে । ধরা পড়িবে জানিয়া-শুনিয়াই সে যেন এই মিথ্যা কথাগুলি বলে । এ যেন তাহার এক ধরনের পরিহাস । কালোকে সাদা বলিয়া আড়ালে সে হাসে । ঘরে গিয়া শশী মাতিকে জিজ্ঞাসা করিল, কি কষ্ট হচ্ছে রে মতি ? মতি তাহ জানে না । সে আন্দাজে বলিল, গা ব্যথা কচ্ছে ছোটবাবু, তেষ্টা পেয়েছে'। পিসীকে শান্ত করিয়া বুচি আসিয়াছিল, বলিল, আজ বড় কেশেছে। ছোটবাবু সারাদিন । * কানে নল লাগাইয়া শশী মতির বুকটা পরীক্ষা করিয়া দেখিল। এ পরীক্ষায় মতির বড় গুলজা করে, বুকের মধ্যে চিপ-চিপ করিতে থাকে । স্টেথোস্কোপের নল বাহিয়া তাহা শশীর কানে পৌছায়, সে অবাক হইয়া বলে, নিশ্বাস বন্ধ করে থাকতে তোকে কে বলেছে, মতি, জোরে জোরে নিশ্বাস নে!—বুচি আলোটা উচু করিয়া ধরিয়াছে, শশী মতির মুখের দিকে তোকায়। ভাঙা লণ্ঠনের রাঙা, আলোতে মতির রঙ যেন মিশিয়া গিয়াছে। নিঃশব্দ পদে কুসুম যে কখন পিছনে আসিয়া দাড়াইয়াছিল ! বুকে ve হয়েছে কি ? এত পরীক্ষে কিসের ? একটু সর্দি বসেছে বলে মনে হচ্ছে পরানের বো । গরম তেল মালিশ कहद्म मेिंs । কুসুম ভীরুকণ্ঠে বলে, সর্দি ঠিক তো ছোটবাবু ? 1 পরীক্ষের রকম দেখে । ভঙ্গে বুকে কঁপনি লেগেছে; মা, ক্ষয় রোগেই বা ধরল।-ওলো মতি, বলিনি তোকে ? বলিনি। জরগায়ে হাওয়ায় গিয়ে বসিস নে, ঠাণ্ড লেগে । মরবি ? শশী বাহিরে গিয়া একটু বসে। মোক্ষদা। তখন সবিস্তারে তাহাকে শোনায় তাহার আছাড়ি খাওয়ার বৃত্তান্ত ৷ বলে, বেী আমাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে বাবা, বৌ নিয়ে হয়েছে আমার মরণ । নীচু গলায় আবোল-তাবোল অনেকক্ষণ মোক্ষদা বকে। 'হারু আজ মুরিয়াছে দিন সাতেক, তার কথা উল্লেখ করিয়া সে এখন আর সুর করিয়া কঁদ্রে না, বার বার শুধু চোখ মোছে, গলাটা ধরিয়া আসে ; স্বামীর শোকে ভিজিয়া-আসা গলায় থাকিয়াল থাকিয়া নিন্দা করে সে কুহুমের,-শুনিয়া মনে হয় সবই বুকি সত্য বলিতেছে। বুচি চুপ করিয়া শোনে, কথাটি বলে না ; না দেয় সায়, না করে প্রতিবাদ। আর ।