পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যায়! আঙুর খাইতে খাইতে শশী পাগলদিদির মুখখানা নীরবে দেখিতে থাকে । 'রেখাগুলিকে তাহার মনে হয় কালের অঙ্কিত চিহ্ন-সাঙ্কেতিক ইতিহাস। কি জীবন ছিল পাগলদিদিবু যৌৱনে ? শশী তখন জন্মে নাই। জ্যাজ বিশীর্ণ দেহটি তখন সুঠাম ছিল, মুখের টান-করা ত্বকে যখন লাবণ্য ছিল, কেমন ছিল তখন পাগলদিদি-মুখের, রেখায় আজ কি তাহা সে পড়িতে পরিবে ? গুছানো সংসার পাগলদিদির । উপুড়া-করা বাসনগুলি সাজানো, হাড়িকলসীর মুখগুলি ঢাকা, আমকাঠের সিন্দুকটিার গায়ে ধৌত পরিচ্ছন্নতা, বিলম্বজে দীপটির শিখা উজ্জল। এখনো ধূপের মূহু গন্ধ আছে! আর শাস্ত-সব এখানে শাস্ত । মৃদু মোলায়েম প্রশাস্তি ঘরে ব্যাপ্ত হইয়া আছে । এ ঘরের আবহাওয়ার অমায়িকতা যেন নিশ্বাসে গ্রহণ করা যায় । ভাঙা হাটে যে বিষন্ন স্তব্ধতা ঘনাইয়া থাকে এ তা নয় । এ ঘরে বহু যুগ ধরিয়া যেন মানুষের জ্বালা-করা বেদনার হল্লা প্ৰবেশ করে নাই । এ ঘরে জীবন লইয়া কেহ যেন কোন দিন হৈ-চৈ করিয়া বঁাচে নাই,-আজীবন শুধু ঘুমাইয়া এ ঘরকে কে যেন ঘুম পাড়াইয়া রাখিয়াছে। বড় ভাল লাগে। শশীর । সে তো ডাক্তার, জাহত ও রুশ্নের সঙ্গে তার সারাদিনের কারবার-দিন ভরিয়া তাহার শুধু মাটিও ছোয়া বাস্তবতা, শ্ৰান্ত মনে সন্ধ্যার জনহীন মন্দিরে বসার মতো বুড়োবুড়ীর এই নীড়ে সে শান্তি বোধ করে । শুধু আজ নয়, এখানে আসিলেই তাহার মন যেন জুড়াইয়া যায়। অথচ আশ্চর্য এই, এই ঘরখানার এতটুকু আকর্ষণ বাহিরে সে বোধ করে না । এখানে না আসিলে সে তো বুঝিতে পারে না মনে তাহার জ্বালা বা অসন্তোষ আছে। এখানে আসিয়া সে সুস্তাপ তাহার ধীরে ধীরে জুড়াইয়া আসে, এই ঘরের বাহিরে তাহার দিনসপ্তাহ-মাসব্যাপী জীবনে তাহা এমনভাবে খাপ খাইয়া মিশিয়া থাকে যে, Tț9 GT dS^e 93 al