পাতা:পুরোহিত-দর্পণ.djvu/৩৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩8
পুরোহিত-দর্পণ।
১ম খণ্ড

সোঽহং” এই মন্ত্র হৃৎপ্রদেশস্থ দীপকলিকাকার জীবাত্মাকে মূলাধারস্থিত কুলকুণ্ডলিনীর সহিত সুষুম্নাপথে মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মণিপুর, অনাহত, বিশুদ্ধ এবং আজ্ঞা নামক ষট্‌চক্র (চতুর্দ্দল, ষড়্‌দল, দশদল, ষোড়শদল ও দ্বিদলপদ্ম) ভেদ করিয়া শিরোঽবস্থিত অধোমুখ সহস্রদল কমলের কণিকামধ্যস্থ পরমাত্মাতে সংযোগ করিয়া তথায় দৈহিক পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু, আকাশ, গন্ধ, রূপ, রস, স্পর্শ, শব্দ, নাসিকা, জিহ্বা, চক্ষু, ত্বক, কর্ণ, বাকু, হস্ত, পদ, পায়ু, উপস্থ, প্রকৃতি, মন, বুদ্ধি, অহঙ্কার এই চতুর্ব্বিংশতি তত্ত্বকে বিলীন ভাবনা করিয়া তৎপরে অঙ্গুষ্ঠস্বারা বামনসাপুট রোধ করিয়া যং এই ধূম্ৰবর্ণ বায়ু বীজ চিন্তা করিয়া প্রাণায়ামানুসাবে ১৬ বার জপ করতঃ বামনাসা দ্বারা সমস্ত দেহ বায়ুতে আপূরণ করিবে। পরে উভয় নাসা টিপিয়া ধরিয়া ঐ যং বীজটী ৬৪ বার জপ করিতে করিতে কৃষ্ণবর্ণ পাপপুরুষের সহিত নিজ দেহ শোষণ চিন্তা করিবে। তৎপরে ঐ “যং” বীজ ৩২ বার জপে দক্ষিণনাসা দ্বারা বায়ু ত্যাগ করিবে। পরে দক্ষিণনাসাপুটে “রং” রক্তবর্ণ এই বহ্নিবীজ চিন্তা করিয়া ১৬ বার জপ পূর্ব্বক বায়ু দ্বারা দেহ পূরণ করিবে এবং ৬৪ বার জপে কুম্ভক করিয়া মূলাধারোত্থিত বহ্নিদ্বারা কৃষ্ণবর্ণ পাপপুরুষ সহিত দেহ দগ্ধ চিন্তা করিয়া পুনরায় বত্রিশবার জপে বামনাসা দ্বারা দগ্ধীভূত পাপপুরুষের ভস্মের সহিত বায়ু পরিত্যাগ করিবে। পরে “ঠং” এই চন্দ্রবীজ শুক্লবর্ণ চিন্তা করিয়া ১৬ বার জপে পূর্ব্বরূপ দেহপূরণ পূর্বক “রং” এই বরুণবীজ ৬৪ বার জপে কুম্ভক করিয়া ললাটে চন্দ্র আনয়ন করিয়া চন্দ্র-বিগলিত মাতৃকাবর্ণাত্মিকা সুধা দ্বারা সমস্ত দেহ পুনরায় রচনা করিবে। পরে “লং” পৃথ্বীবীজটীকে চিন্তা করিয়া ৩২ বার জপে দেহকে সুদৃঢ় চিন্তা করিয়া দক্ষিণনাসা দ্বারা বায়ু ত্যাগ করিবে। অনন্তর “হংসঃ” এই মন্ত্রে জীবাত্মাকে বিলীন কুলকুণ্ডলিনী সহ চতুর্ব্বিংশতি তত্ত্বকে স্ব স্ব স্থানে স্থাপন করিয়া নিজ শরীরকে অভীষ্টদেবের সদৃশ চিন্তা করিবে।

 ভূতশুদ্ধিং ততঃ কুর্য্যাৎ প্রাণায়ামক্রমেণ চ। ইতি জ্ঞানার্ণবে।

 প্রাণায়ামের অনুক্রমানুসারে ভূতশুদ্ধি করিতে হয়।

সংক্ষেপ-ভূতগুদ্ধি।*

 রং মন্ত্রে আপনার চতুর্দ্দিকে জলধারা দিয়া আপনাকে বহ্নি প্রাচীরের মধ্যবর্ত্তী ভাবনা করিবে। পরে নাসিকাদ্বয়, টিপিয়া ধরিয়া


* ক্ষিতি, অপ, তেজ, মুরুৎ ও ব্যোম-এই পঞ্চভূতের দ্বারা দেহ নির্ম্মিত হইয়াছে। এই পঞ্চভূতের শুদ্ধি বিধানকেই ভূতশুদ্ধি বলা হইয়া থাকে।