পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আন্ধা বন্ধু
১৯৯

যার কপালে সুখ নাই রাজা কোথায় সুখ পায়।
মূল ঘরে[১] যার পালা নাই রাজা কি করে ঠিকায়[২]
রাজা বিদায় দেও আমায়॥”
ঘর ছাড়িল বান্ধৈ ছাড়িল যায় সকল ছাড়িয়া।
বেবান[৩] পথে অন্ধের বাঁশী উঠিল বাজিয়া।
বনে কান্দে পশুরে পঙ্খী সেই বাঁশী শুনিয়া॥
কোন্ অভাগীর ভাবের পাগল দিয়াছে ছাড়িয়া।
পরাণ ডোরে পাগল কেন না রাখছে বান্ধিয়া॥
কেউ দেয় অঙ্গেতে ধূলা কেউ সাধে খা।
কেউ বলে বাঁশীরে আমার সঙ্গে লইয়া যা॥
বাজিতে বাজিতে বাঁশী রাজ্য ছাড়াইল।
দূরের রাজার দেশে কান্দিয়া উঠিল॥ (১——৬৩)

(৬)

দিশা— কুঞ্জ সাজিলারে
আজি কুঞ্জে রাধা কানুর মিলনরে।

আরেক রাজার মুল্লুক কথা শুন দিয়া মন।
রাজ্যবাসী যতেক লোক ঘুমে অচেতন॥
পাতে ঘুমায় ফুলের কলি পুষ্পেত ভমরা।
রাজার বুকে শুয়ে রাণী এক গাছি ফুলের ছড়া॥
পাড় ঘুমায় পর্ব্বত ঘুমায় কেবল জাগে নদী।
আর জাগে বিরহিণী ঘরে চক্ষে নাহি নিদি॥


  1. মূল ঘরে=আদত গৃহে, আসল ঘরে।
  2. ঠিকায়=ঠেকা দ্বারা; ঘরের বাহির হইতে ঝড়ের বেগ সামলাইবার জন্য যে বাঁশের খুঁটি দেওয়া যায় তাহাকে ‘ঠেক।’ বা ‘ঠিকা’ বলে।
  3. বেবান=দূরের।