পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজা তিলক বসন্ত
৩৭১

বনে গিয়া দেখবা চাহিয়া কেউত কাছে নাই।
সেজয়ালীর[১] বাত্তি না দিতে কড়ার তৈল না পাই॥”
রাজা কাইন্দা জারে জার না দেখি উপায়।
বাপের বাড়ী যাও রাণী বলিয়া বুঝায়॥

রাণী— “তুমি না ধার্ম্মিক রাজা সব্বলোকে কয়।
নিজ নারী সঙ্গে লইতে কেন কর ভয়॥
তুমি হইলা কায়া পরভু আমি গায়ের মলা।
তোমার চরণায় পরভু আমি পন্থের ধূলা॥
তুমি ত সায়র পরভু আমি কাঞ্জিল মীনরে।
দণ্ডেক ছাড়িলে মোর না রইব পরাণরে॥
হিয়ার পরশমণি গো পরভু দুই নয়ানের তারা।
তিলদণ্ড না থাকিব তোমায় হইয়া ছাড়া॥
আমি থাকবা বাপের বাড়ী তুমি থাকবা বনে।
পতি যদি নারীরে ছাড়ে কি করব তার ধনে॥
বাপের মায়ের সোহাগেতে আমার কাজ নাই।
কিরপা কইরা লহ সঙ্গে বনে চইলা যাই॥
জোড় মন্দির ঘর সোণার পালং খাট।
নারীর নাই সে দেয় শুন ভাইয়ের রাজ্য পাট॥
বনের মন্দিরে গো রাজা আঞ্চল বিছাইব।
মাটির পালঙ্কে শুইয়া সুখে নিদ্রা যাইব॥
বিরকতলা[২] বাড়ী ঘর পাতায় বান্ধিও।
সেই ঘরে অভাগী সূলায় পদে স্থান দিও॥
বাপের বাড়ী ক্ষীর ননী এসবে না চাই।
বনে আছে বনের ফল তাতে সুখ পাই॥


  1. সেজয়ালীর=সাঁঝের।
  2. বিরকতলা=বৃক্ষতলা