পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজা তিলক বসন্ত
৩৭৫

এক দুঃখ বড়।
যাঁর ছিল দাসদাসী শতেক নফর॥
রাজ-সিংহাসন ছিল সংসারের রাজা।
দৈব বিরোধী হইয়া তারে দিল সাজা॥
(হায় হায়) হাঁটিয়া অভ্যাস নাই পায়ে ফুটে কাঁটা।
সুদিনে উজান দরিয়া আজ ধরিয়াছে ভাটা॥
খাট পালং নাই পাতার বিছানা।
সোণার মন্দির থুইয়া বিরক্ষতলা থানা॥
ভাণ্ডার ভরা রতন মাণিক না ছিল গুণাতি[১]
ভাণ্ডারে জ্বলিত যার রতনের বাতি॥
কাণাকড়া সঙ্গে নাই কি হবে উপায়।
তিনদিনের উপাসী রাজা কান্দিয়া বেড়ায়॥
সোণার না রাজছত্র উড়ত যার শিরে।
গাছের পাতায় তার মাথা নাহি ঘুরে॥
অঙ্গেতে বসন নাই পরিধানে টেটী।[২]
ভাবিয়া সোণার অঙ্গ হইছেরে মাটী॥

কথার ভাবে— 
আইঞ্চলে বাঁধা ফল।
দূর নদীতে জল॥
কেউ জল আনে কেউ করে হা হুতাশ।
গাছের ডাল ভাঙ্গিয়া কেউ শিরে করে বাতাস॥
মক্ষির চাক কচলাই মধু দিলা।
রাজারাণীর চক্ষের জল ঝরে।
এমন সোহাগ মায় না করে॥


  1. না ছিল গুণাতি=অগুন্তি, গণিয়া শেষ করা যায় না।
  2. টেটী=ছিন্নবস্ত্র।