পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৯০
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

অন্ধসন্ধ্যা বামুন বুড়া লড়িত ভর করি।
ডাকিতে লাগিল মাও ভিক্ষা দেও মোরে॥
কিবা ভিক্ষা দিব কন্যা ভাবে মনে মন।
ফুরাইয়া হইয়াছে খালি বার ভাণ্ডারের ধন॥
ক্ষুদকণা নাই সে দেখ সকল বিলানিতে গেছে।
অঙ্গের বসন মাত্র বাকী তার আছে॥
আধেক কাটিয়া দিব ভাবে মনে মন।
এন কালে ডাক দিয়া কহিছে বাম্মন।

“রাজলক্ষী মাও মোর শুন দিয়া মন।
বারবচ্ছর করলাম আমি কত না ভরমন॥
কত রাজার মুল্লুক চাইয়া মাগো কত দেশে যাই।
আমার মনের ভিক্ষা কোথাও না পাই॥
কেউ দেয় ধন রত্ন কেউ দেয় কড়ি।
কেউ বা খেদায় দূরে গাল মন্দ পাড়ি॥
অঙ্কের যতেক দুঃখ না যায় কহন।
নগর ভরমনা করি ভিক্ষার কারণ॥”

কন্যা বলে “বামুন ঠাকুর কিবা ভিক্ষা চাও।
আগে ত আসন কর ধইয়া তুমি পাও॥”
বরম্মন বলে “মাও ইতে কার্য্য নাই।
ভিক্ষা পাইলে আমি দেশে চল্যা যাই॥
ভিক্ষা লইতে গেছলাম আমি ঐনা রাজার বাড়ী।
দেখাইয়া দিল তারা মালী রাজার বাড়ী॥
রাজার বাড়ীতে আমার ভিক্ষা না মিলিল।
তোমার না বাড়ী খানি তারা সুধাইয়া দিল॥”

কন্যা কহে “কিবা ভিক্ষা কহতো বামন।”
ভিক্ষাশূর কহে “মোরে দেহ ত নয়ন”॥