পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সোণাবিবির পালা

 গত ১৯শে পৌষ তারিখে শ্রীযুক্ত চন্দ্রকুমার দে আমাদের একটি পালা পাঠাইয়াছেন, তাহার নাম সোণাবিবির পালা। চন্দ্রকুমারবাবু এই পালাটি তিন জন বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট হইতে সংগ্রহ করিয়াছেন। তাহাদের দুইজন—রহমন সেখ ও যদুনাথ বাউল; ইহারা শ্রীহট্ট অঞ্চলের কাটিহালি গ্রামের অধিবাসী। তৃতীয় ব্যক্তি রজনী মাল নামক গায়ক আজমিরি বাজার অঞ্চলের একজন মাঝি।

 পালাটি সম্পূর্ণভাবে এখনও চন্দ্রকুমারবাবু সংগ্রহ করিতে পারেন নাই। আপাততঃ ইহার ৫৫০টি ছত্র পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু আমাদের গ্রন্থের ছাপা প্রায় শেষ হইয়া আসায় স্থানাভাবে এই ৫৫০ ছত্রও আমরা সমস্ত প্রকাশ করিতে পারিলাম না। পালাটির দুই জায়গা হইতে ৮২ ছত্র উদ্ধৃত করিয়া দিলাম মাত্র। নায়কের প্রেমের গভীরতা এই দুইটি স্থানে কবি অপরূপভাবে ভাষায় ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। উদ্ধৃত নমুনা হইতেই কবির শক্তির যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যাইবে।

 যতদূর পাওয়া গিয়াছে, পালাটির গল্পাংশ এইরূপ। পালার নায়ক মামুদের পিতার নাম চান্দ সদাগর। তাঁহার সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির বর্ণনা দিয়াই পালা আরম্ভ করা হইয়াছে। পুত্ত্রের জন্মের পর চান্দ সদাগর বাণিজ্যে গিয়া আঠার বৎসর কাল আর প্রত্যাবর্ত্তন করেন না। তখন মামুদ মাতার অনুমতি লইয়া বাণিজ্যে যাত্রা করে ও পথে সুন্দরী সোণাবিবিকে দেখিয়া মুগ্ধ হয়। তাহার পর বন্ধু মমিনের সাহায্যে মামুদ সোণাবিবিকে বিবাহ করে, কিন্তু বিবাহের পর পত্নীর প্রেমে আত্মহারা হইয়া মামুদ বিষয়কর্ম্ম সমস্ত একেবারে অবহেলা করিতে আরম্ভ করে। ফলে তাহাদের অত্যন্ত সুরবস্থা হয়। অবশেষে বন্ধু মমিনের উপদেশে স্ত্রীর দুর্দ্দশা দূর করিতে মামুদ নৌকা লইয়া আবার বাণিজ্যে বাহির