পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণাবিবির পালা
৫৭১

মুখে চুম্ব দিয়া মামুদ ঘরের বাহির হৈল॥
দুয়ারেতে মাও জননী দেখ্যা লজ্জা পাইল।

* * * *

নৌকাডুবির পরে

বেবানে পড়িয়া মামুদ কতির হইল।
হেন কালে সোণার মুখ মনেতে পড়িল॥
হায় হায় সোণার সঙ্গে আর কি হবে দেখা।
মানুষ করিয়া বিধি কেন না দিল পাখা॥
পাখা থাকতরে বিধি যাইতাম উড়ি।
পরের ঘরে কেমন আছে আমার সোণা বিবি॥
পরের ঘরের কালা মুখ কেমনে থাকে সইয়া।
ছয়মাস কেমনে আছে আমারে ছাড়িয়া॥
এক দণ্ড আমারে না দেখলে প্রাণে মরে।
আছে কি না আছে সোণা ছয়মাস পরে॥
আমার সোণার মরজি মেজাজ পরে কি জোগায়।
কালামুখে কটু বাক্য তাহারে শোনায়॥

খিদা লাগিলে সোণার মুখে নাইসে রা।
মুখ দেখ্যা কে বুঝিবে তাহার অন্তরা॥
নিদ্রা যুদি পায়রে সোণার কে দেয় বিছানি।
তিরাস লাগিলে তার কেবা জুগায় পানি॥
হায় নদীর পারে আইলে সোণা কলসী কাঁকে লইয়া।
শুধা কলসী রাখ্যা ভূঁয়ে থাকে পন্থ চাইয়া॥
আজি যদি দেখতরে সোণা আমার ডিঙ্গার পাল।
বাতাসে সরিয়া যাইত অন্তরার জঞ্জাল॥[১]


  1. বাতাসে.........জঞ্জাল—আজ যদি আমার নৌকার পাল সোণা দেখিতে পাইত, তবে সেই পালের স্পর্শ-মধুর হাওয়ার তাহার অন্তরের দুঃখ দুর হইয়া যাইত।