পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শীলাদেবী
৬৯

না উঠিতে চান্দ মোর আন্ধারে ডুবিল।
আষাঢ়ে আশার নদী শুকাইয়া গেল॥
মিছা আশায় বান্ধিলাম রে সোণার বাড়ি ঘর।

* * * *

* * * *

কোন দৈবে আগুন দিয়া পুইড়া করলো ছাই॥
মনের কথা যত ইতি রহিল রে মনে।
কি কার্য্য করিল হায় দারুণ দুষ্মনে॥
পুষ্পের সমান বুকে তীর না মারিল।
দারুণ বিষের তীর পৃষ্ঠে বাহিরিল॥
কিবা ধন লইয়া আমি থাকিবাম ঘরে।
দুরন্ত দুষ্মন মুণ্ডা মারিল আমারে॥
বনের না গাছ গাছালী পশু পক্ষী যত।
মনের বেদনা আমি কহিব বা কত॥
আর না সে হইবে দেখা প্রভুর সঙ্গেতে।
জন্মের মত অভাগীরে রাইখ্যা গেলা পথে॥
শুনরে গরল বিষ আমার মাথা খাও।
যে পথে গিয়াছে বন্ধু সে পথ মোরে না দেখাও॥
সে পথ আন্ধাইর যদি মোরে লইয়া চল।
দাগা দিয়া পরাণবন্ধু কৈবা ছাইরা গেল॥
সোণার পালঙ্ক আর ফুলের বিছানা।
এই হইতে শেষ আজ দিন দুনিয়ার দানা॥
বিদায় দেও মাও বাপগো বিদায় দেও মোরে।
আর না যাইবাম আমি পরগনা সহরে॥
আর না দেখিবাম আমি তোমাদের মুখ।
আর না দেখিবাম চাইয়া পরগনার লোক॥
নিবিল ঘরের বাতি আচমকা বাতাসে।
নগর কাণা কালা মেঘরে উড়িল আকাশে॥