পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূমিকা
১৩

নিয়মের ব্যত্যয় হইয়াছে, বলিয়া মনে হয় না। বস্তুতঃ অসম্পূর্ণ গীতিকাটির শেষ কয়েক ছত্রে বিলাপাময়ী সুন্দরীর যে অটল একনিষ্ঠ প্রেমের রেখাপাত হইয়াছে,―তাহার শেষ দেখিবার ইচ্ছা আমাদের অতৃপ্ত রহিল। বাঙ্গালা দেশের ইতিহাসের অধ্যায়ে অধ্যায়ে সীতা-সাবিত্রী। কেহ জ্বলন্ত আগুণে পুড়িয়া মরিয়াছেন, কেহ বা তদপেক্ষাও কঠিনতর ত্যাগ দ্বারা স্বীয় মূর্ত্তি মহিয়ষী করিয়া দেখাইয়াছেন। অদূরে তমসা নদীর তীরে যে বীণা দূর অতীত কালে বাজিয়া উঠিয়াছিল―তাহার ঝঙ্কার যুগে যুগে কবিরা সুরতালমানযোগে প্রতিধ্বনি করিয়া এ দেশের প্রেম-মহাব্রতের পবিত্রতা প্রতিপন্ন করিয়াছেন। এই সকল নারী চরিত্রের কে বড় কে ছোট তাহা নির্ণয় করা শক্ত,―এ বাগানের গোলাপ ও স্থলপদ্ম, সন্ধ্যা মালতী ও মল্লিকা সকলটিই নিখুঁত সুন্দর। এই পালা-গানটিও বঙ্গসাহিত্যের আদি যুগের অর্থাৎ ত্রয়োদশ কিংবা চতুর্দ্দশ শতাব্দীর রচনা বলিয়া মনে হয়। ইংরেজী অনুবাদের মুখবন্ধে তৎসম্বন্ধে আলোচনা করিয়াছি।