পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধোপার পাট
২৭

হাওরের বাকুণ্ডি[১] যেমন ধুলা নেয় সে উড়ি।
এক দণ্ড থির নাই পথে পথে ঘুড়ি॥
গাছের তলায় নদীর পারে এই আছে নাই।
কখন হাসে কখন কান্দে কখন গান গায়॥

* * * * *

বইসা আছে রুক্মিণী যে পালঙ্ক উপরে।
পন্থের পাগল নারী পরবেশে অন্দরে॥
চান্দের সমান রাজার পুত্ত্রু দরবারে বসিয়া।
সবাই বলে পাগল যায় এই পথ দিয়া॥১০
কত দিনে রাজ্য জুইড়া এই আনিগুনি।
আর না দেখিল কেউ সেই পাগলিনী॥[২]১২
মেঘের মুখে চান্দের আলো তারার ঝিকিমিকি।
ক্ষণে ক্ষণে আন্ধাইর পথ চক্ষে নাহি দেখি॥১৪
আষাঢ়িয়া ভরা নদী ভরা কূলে কূলে।
দৌরিয়া আইল ভাবের পাগল সেইনা নদীর কূলে॥১৬
দেওয়ায় ডাকে ঘন ঘন বিষ্টি পড়ে রইয়া।
নদীর ঘাটেতে কন্যা আইল দৌরিয়া॥১৮
কাঞ্চন— “মনের দুঃখু মিটিয়াছে মিটিয়াছে আশা।
দেখিলাম বন্ধুর মুখ মনের ছিল আশা॥২০
সুখেতে থাকগো বন্ধু সুন্দর নারী লইয়া।
সুখে কর গীর বাস জনম ভরিয়া॥২২
না লইও না লইও বন্ধু কাঞ্চনমালার নাম।
তোমার চরণে আমার শতেক পরণাম[৩]২৪


  1. বাকুণ্ডি=ঘূর্ণিত চক্র।
  2. সেই পাগলিনী একদিন মাত্র রাজপুত্র ও রুক্মিণীকে রাজ-অন্তঃপুরে দেখিয়া আসিল, তার পরদিন হইতে কেহ আর তাকে দেখিতে পাইল না।
  3. Cf. “তোমার চরণে বঁধু শতেক পরণাম।
    তোমার চরণে বঁধু লিখ আমার নাম॥
    লিখিতে দাসীর নাম লাগে যদি পায়।
    মাটিতে লিখিয়া নাম চরণ দিও তায়॥” চণ্ডীদাস