পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

ঠাকুর কহে সাধু তুমি এরে দেও ঠাঁই।
এরে রাখ্যা আমি তবে গয়া কাশী যাই॥১২
ইহকাল গেল মোর ভিক্ষা যে করিয়া।
পরকালের কাম করি গয়া কাশী গিয়া॥১৪
দুঃখের উপরে দুঃখ অন্ধ পুত্ত্র মোর।
তোমার কাছে সইপ্যা কাটি সংসারের ডোর॥১৬
ভাবিয়া চিন্তিয়া সাধু কোন কাম করিল।
অন্ধ পুত্ত্র লইয়া সাধু কন্যার কাছে গেল॥১৮

(৬)

 গদ্য—সেই অর্দ্ধ দণ্ড শেষ হইবার বেশী বিলম্ব নাই। সাধু গিয়া কন্যার সাম্‌নে খারাইছে,[১] আর অঝর নয়নে তার চক্ষের জল পড়িতেছে।

এতেক দেখিয়া বাপে দুঃখিত হইল।
কান্দিয়া কাঞ্চনমালা কহিতে লাগিল॥
শুন শুন ওহে বাপ কহি যে তোমারে।
কি জন্য কান্দিছ বাপ কহ গো আমারে॥
কোন দোষ করিলাম পায় গো মুই অভাগিনী।
কোন দোষে তোমার চক্ষে বহে পানি॥
জন্মিয়া না দেখিলাম অভাগিনী মায়।
মাও বাপ এক হইয়া তুমি পালিলা আমায়॥
মেঘে যেমন পড়ে পানি গো নদী লালা ভাসে।
তোমার কান্দন দেইখ্যা ধৈর্য্য নাই সে আসে[২]১০
কও কথা শুনি
কোথা হইতে আন্‌লে শিশু জ্বলন্ত আগুনি॥১২


  1. খারাইছে=দাঁড়াইয়াছে। কন্যার এই কথা শুনিয়া সাধু খুব কান্‌তে লাগ্‌ল।
  2. মেঘের জল পাইয়া যেরূপ নদী নালা কুল ছাপাইয়া উঠে, তদ্রূপ তোমার কান্না দেখিয়া আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গিয়া যাইতেছে।