এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাঞ্চনমালা
৯১
পথে নাইরে চান্দের আলো ঘাটে নাইরে খেয়া।
দরদী মাও ত নাই দুনিয়ার মাঝে মেওয়া[১]॥৬
এই ঘরে বইসা না মাও বাইন্দা দিত চুল।
আর ত না দেখিব অভাগী সেইত না মায়ের কোল[২]॥৮
মায়ের রাও[৩] পবনের বাও[৪] এমন শীতল নাই।
জালুনি[৫] তাপিত প্রাণ কি দিয়ে জুড়াই॥১০
বাঁচ্চিয়া যদি থাক্ত মাও থাকিত বাঁচ্চিয়া।
অন্ধ ছাওয়ালের কাছে নাই সে দিত বিয়া॥১২
বাপেরে বা দোষী কেনে কপাল হইল বোড়া[৬]।
সাক্ষী হও চন্দ্র সূর্য্য আস্মানের তারা॥১৪
কোলের মধ্যে সাক্ষী হও অন্ধ ছাওয়াল স্বামী।
আজি হইতে অভাগীর তুমি সে সোয়ামী॥১৬
সাক্ষী হওরে গাছ গাছালি বনের পশু পঙ্খী।
আজি হইতে কাঞ্চনমালা হইল উদাসী[৭]॥১৮
এই মনে কান্দিয়া কন্যা রাত্রির ভিতর।
বাপের বাড়ী ছাইড়া যায় ভরাই নগর॥
(হায় হায় কইরা) বনে থাক বাঘ ভালুক কহি যে তোমারে।
এই ছাওয়াল রাখিয়া কেন না খাও আমারে॥২২
- ↑ দরদী......মেওয়া=পৃথিবীর মধ্যে স্নেহশীলা (দরদী) মাতা অতি বড় মিষ্ট দ্রব্যের মত।
- ↑ কোল=ময়মনসিংহবাসীরা ‘কোল’, শব্দকে “কুল” উচ্চারণ করেন এবং সেইরূপ উচ্চারণ করিলে ‘চুল’ শব্দের সঙ্গে মিল ভাল হয়।
- ↑ রাও=রব, কণ্ঠস্বর।
- ↑ বাও=পবন দেবের প্রদত্ত হাওয়া। মাতার কণ্ঠস্বর ও মৃদু শীতল পবন উভয়ই প্রাণ জুড়াইয়া দেয়।
- ↑ জালুনি=জ্বলন্ত।
- ↑ বোড়া=বিরুদ্ধ।
- ↑ উদাসী=উদাসিনী, সংসার বিরাগিনী।