পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
পূর্বববঙ্গ গীতিকা

দৈবেতে ঘটাইল যাহা শুন দিয়া মন।
বিধাতা লেখ্যাছে যাহা কপাল-লিখন॥
চৌদ্দ ডিঙ্গা বাহি তথা মুরাই নন্দন।
কাঞ্চনা নগরীর ঘাটে দিলা দরিশন॥ ১২
নদীর কিনারে পুরী দেখিয়া সুন্দর।
সেই খানে বান্ধে ডিঙ্গা মদন সদাগর॥
এমন সময় দৈবযোগে ভেলুয়া সুন্দরী।
ছান করিতে আইল ঘাটে লইয়া সহচরী॥ ১৬
জলেতে নামিয়া কন্যা করে জলকেলি।
পঞ্চ ভাইয়ের বউএ দেখ্যা হাসে খল খলি॥
কেউবা সাঁতার দিয়া সাঁতার জলে[১] যায়।
ভেলুয়া সুন্দরী থাক্যা দেখে কিনারায়। ২০

আচানক[২] সাধুর ডিঙ্গা কোথা হইতে আইল।
না জানি কোন্ দেশে কাইল রজনী পোষাইল[৩]
কোথা হইতে আইল সাধু কোথায় বাড়ীঘর।
কারে বা জিজ্ঞাসা করি কে দেয় উত্তর॥ ২৪
কোন্ বা দেশে যাইব সাধু বাণিজ্য কারণ।
এই মত নানা কথা কন্যা ভাবে মনে মনে॥
জলের ঘাটে ছান করে যত সহচরী।
কিবা দেখ্যা এমন হইল ভেলুয়া সুন্দরী॥ ২৮

সাঁতার নাহি দিল কন্য। হাসি নাই মুখে।
মনের যত কথা কন্যা মনে লুইক্যা[৪] রাখে॥


  1. ‘সাঁতার জলে’ = গভীর জল, যেখানে সাঁতার দেওয়া ভিন্ন উপায় নাই।
  2. আচানক = আশ্চর্য্য।
  3. কাইল রজনী পোষাইল = কল্যকার রাত্রি যাপন করিল।
  4. লুইক্যা = লুকাইয়া।