এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৪
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা
(৩)
ঘুম হইতে উঠিয়া রাণীরে ভালা কোন কাম করে।
ধীরে ধীরে যাইন[৩] গো রাণী বার বাংলার ঘরে॥২
শুইয়াছিল দাসীগণ ডাকিয়া জাগায়।
“নদীর ঘাটে যাইব ছানে সঙ্গে যাবে আয়॥”৪
কেউ লইল সোণার কলসীরে ভালা কেউ বা লইল ঝারি।
কেউ বা লইল মেচের গামছা রে[৪], ভালা, কেউ বা নীলাম্বরী॥৬
বাড়ী[৫] ভইরা গন্ধ তৈল কেউ বা লইল হাতে।
সেই গন্ধ ছুটিয়া গেল শতেক যোজন পথে॥৮
কেউ বা লইয়া গাইষ্ট গিলা চলে নদীর কুল।
সঞ্চা[৬] ভইরা কেউবা তুইলা লইল ফুল॥১০
কেউবা লইল ধান্যদূর্ব্বা দেবেরে পূজিতে।
ছানের যত আয়োজন কেউবা লইল মাথে॥১২
কালী হাঞ্চী[৭] রাইতের নিশা গেল নদীর কূল।
আস্মান জুইরা[৮] ফুট্যা আছে সোনার চাম্প ফুল॥১৪
- ↑ হইরাণ=হয়রাণ। কোন দেবতা আমাকে কষ্ট দিবার জন্য এই দীঘি কাটাইতে আমাকে প্রবৃত্ত করিল।
- ↑ আরাই=হারাই।
- ↑ যাইন=গেলেন।
- ↑ মেচের গামছা=আসামের মেচ জাতীয় শিল্পীর নির্ম্মিত গামছা।
- ↑ বাড়ী= বাটী পাত্র।
- ↑ সঞ্চা=ফুলের সাজি।
- ↑ কালী হাঞ্চী=পূর্ব্ব বঙ্গে এখনও ‘কালা আঞ্জি’ কথা প্রচলিত আছে। অঞ্জনের ন্যায় কালো।
- ↑ জুইরা=জুড়িয়া। আকাশ ব্যাপিয়া সোনার চাঁপাফুল (নক্ষত্রগুলি) ফুটিয়া আছে।