পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৬
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

চাইর কুড়ি কড়ি গুইণা নইলে হয়রে পোণ।
ষোল পোণ কড়ি হইলে হয়রে ভাই কাহোন॥৪০
দশো কাহোণ কড়ি দিয়া গুদারায় হয়রে পার।
কেউবান[১] মরে কেউবান বাঁচে দিশা নাই যে তার॥
বরমপুত্তর পাড়ি দিয়া দশ কাহোণ দিচে কড়ি।
মাটী পাইয়া নোকে কইতো আল্লা রসুল হরি[২]৪৪
দশ কাহণে পারের নাগুল পাইয়া সেরপুর গিরাম[৩]
সেই জন্যে হইয়াছে ভাইরে “দশকাউণা” নাম॥
এহি নদী না পাড়ি দিতে মরত কত জোন।
হাতের টেহা জহর পাতি খাইতো চোরাগোণ॥৪৮
কেউবান ভালা কেউবান মোন্দ থাক্‌তো নায়ের মাঝি।
দিন দুপুরে মারত ছুরি হায়রে এমুন পাজি॥
নুইটা[৪] নিত কাইড়া ছিড়া জহরপাতি যত।
ঐরাণ[৫] জোঙ্গলে নিয়া নেঙ্‌টা ছাইড়া দিত॥৫২
কেউবান মাথায় কুড়াল মারে কেউবান কাটে গলা।
হস্তপদ বন্দন কইরা দেয়রে পানির তলা॥
খুইলা নিতো জেহারপাতি ওয়া অঙ্গে পইরাছে।
ঝাপি টোপ্‌লা খুইলা নিতো, দিতো ওস্তাদের হাতে॥৫৬


  1. কেউবান্=কেহ বা।
  2. মাটী....হরি=পাড়ি দিয়া ডাঙ্গায় পঁহুছিতে পারিলে আরোহিগণ ভগবানের নাম স্মরণ করিত।
  3. গিরাম=গ্রাম।
  4. নুইটা=লুট করিয়া।
  5. ঐরাণ=অরণ্য শব্দের রূপান্তর। প্রাচীন বাঙ্গালা ও পূর্ব্ববঙ্গে ঐরাণ শব্দ জঙ্গলের শব্দের সঙ্গে সর্ব্বদা একত্র ব্যবহার হয় এবং ঐরাণ শব্দ “গভীর” অর্থ বাচক।