—ইচ্ছা কইরা যে কন্যারে নিব্বাস দিছ, তার লাগ্যা আর কান্দা কাডি কেরে[১]? রাণী ডোমণীরে আঞ্জাইয়া[২] ধর্ল—মা! তুই নির্য্যাস[৩] মধুমালার খবর জানছ্[৪]—ক হে কোন্ খানে, কেমনে আছে? তখন ডোমণী কইল—আমি তোমার মধুমালারে জানিও না, চিনিও না। বার বচ্ছর ধইরা নিব্বাস দিছ, হে কি আইজও আছে? তখন রাণী কইল—আমার ঝি ঠিক তোমার মতনই আছিল্। ডোমণী! তুমি আমার কাছে থাক। তোমার মুখ দেখ্যা আমি মধুমালার কথা পাশুরবাম্[৫]। তখন ডোমণী কইল—তাকি অয়[৬]? যে মা তার নিজের কন্যার খবর লয় না, তারে চিনে না, তার কাছে থাক্যা কি অইব[৭]? তখন মায়ে ঝিয়ে চিনা অইল। দুইজনে তখন গলাগলি কইরা খুর কতক্ষণ কান্দ্ল।
বার বছর পূর্ণিত হওনের[৮] আর তিন দিন বাকি আছে। মধুমালা ডোমণীর বেশে মদনকুমারের বাড়ীর দিকে রওনা অইল। যে দিন বার বচ্ছরের শেষ, হেইদিন গিয়া মদনকুমারের বাড়ীত্ উপস্থিত অইল। গিয়া জান্ল যে সাতদিন ধইরা মদনকুমার দানা পানি ছাড়া অইয়া জোড়মন্দির ঘরের কপাট লাগাইয়া রইছে।
এই কথা শুন্যা মধুমালা গিয়া জোড়মন্দির ঘরের কপাটে হাত দিতেই সতীকন্যার হাত লাগ্যা কপাট খুল্যা গেলা, তখল মধুমালা মন্দিরে পর্বেশ কর্যা মদনকুমারের পালঙ্কের উপরে একখান বিউনী রাখ্ল।
গান:— মদনকুমার জিজ্ঞাস করে সাধু ডোমের নারী
কি কারণে হেথা আইলে কোন্ বা দেশে বাড়ী?
কাঞ্চন নগরে ঘর মদন ডোমের নারী
খাড়ি বিউণী বিকাইয়া দেশে দেশে ফিরি।