পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা
৩১৭

নাহিক মৃত্যুভয়, সদারয়, ধনুকেতে চরা।
নগর মোকামে আসি বাজায় নাগরা॥
দেখে সব লোক পলাইল, বিষম হইল, তামলী জুদ্দার।
সৎগোপ গোয়ালা পলায় কান্ধে লয়ে ভার॥
পলায় সব বুড়াবুড়ি, দৌড়াদৌড়ি, হাতে ল’য়ে লড়ি।

ফকির পলায়
মুখে পাকা
দাড়ি

মুসলমান ফকির পলায়, মুখে পাকা দাড়ি॥

মুখে বলে আল্লা, বিশ্ মোল্লা, একি বেটাদের তীর।
এবিপদে রক্ষা কর ওহে সত্যপীর॥
বলে প্রাণ যায়, হায় হায়, কি বিপদ হৈল।
কালুসেখের মা বলে, আমার মুরগী কোথা গেল॥

পালায় সব দৌড়াদৌড়ি, হুড়াহুড়ি ঊর্দ্ধমুখে ধায়।
হাজার দুই সাঁওতাল তারা রাজবাড়ী সান্ধায়[১]
লুটি ঘর সব, কলরব, করিয়ে বেড়ায়।
মানুষ কাটা প’ল্ল সেদিন কুড়ী দুই আড়াই॥
পরে সাঁওতালগণ, হৃষ্টমন্, দেয় টাঙ্গিতে শান্।
লাউজুরে নাড়া বেটাকে দিল বলিদান॥
গেল সব কুমরাবাদে আপন ফোজে কৈল একাকার।
ঘরে অগ্নি দিয়ে বেটারা ক’ল্লে ছারখার॥
পুড়াইল ধানের গোলা, তিল জোন্‌লা, সব আদি যত।
গোরু মো’ষ ছাগল ভেড়া পুড়্‌ল শত শত॥
পূর্ব্বে হনুমান, লঙ্কাখান, যেমনে পুড়ায়।
ঘরা ঘরি অগ্নি দিয়ে সাঁওতাল বেড়ায়॥


  1. সান্ধায়=প্রবেশ করে