পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৫৮
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

গুছুল পৈরাণ[১] হাসি ছাড়িল সকল
আন্ধাইর হইল যেমন আন্দর মহল॥১৬৮
হাসে না সখিনা আর নাহি গায় গান
সোনার পালঙ্কে নাই ফুলের বিছান[২]
তাবেদার[৩] বান্দী যত ভয় পাইল মনে
কিসের লাগিয়া কন্যা থাকয়ে এমনে॥১৭২
পীরিতে মজিয়া দোঁহে ফকীর হইয়া
পরে ত সাদির কথা শুন মন দিয়া॥১৭৪

(৫)

দেওয়ানা ভাব দেখি পুত্রের ফিরোজা সুন্দরী
ফিরোজে ডাকিয়া কাছে আনে তরিঘরি[৪]
শুন শুন পুত্র আরে কহি আরবার
সাদি করাইতাম তোমায় মনেতে আমার॥
সাদি না করিলে দেখ বংশ না থাকিবে
তোমার যে পরে ভিটায় বাতি না জ্বলিবে।
এমন সোনার দেওয়ানি যাইবে ছারখারে
ডুবাইয়োনা সোনার সংসায় অকুল সায়রে॥
তোমার যেমন খুসি তেমন কর সাদি
তোমার ইচ্ছায় কেউ না হইব বাদি।
শুন শুন পুত্রধন রাখ মায়ের কথা
বৃদ্ধ মায়ের প্রাণে দিয়ো না আর ব্যথা॥১২

সাদির কথায় আইজ বিরোধী না হইল
মনোযোগে সকল কথা বসিয়া শুনিল।


  1. গুছুল পৈরাণ=স্নান ও বেশভূষা।
  2. বিছান=বিছানা, শয্যা।
  3. তাবেদার=শরীর রক্ষী; আদেশবাহী।
  4. তরিঘরি=তাড়াতাড়ি।