পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१७ দেহ-বল । জলের এক নাম জীবন । ফলতঃ জল আমাদের জীবনই বটে। জলে স্নান, জল পান, আহারীয় দ্রব্যে জল, জল ভিন্ন আমাদের এক দিনও চলে না। সুতরাং জলটা খুব বিশুদ্ধ হওয়া আবশ্যক । অনেক পল্লীগ্রামে। জলের অবস্থা দেখিলে চোখে জল আসে । ফালুন চৈত্র মাসে পুকুরের জল প্ৰায় শুকিয়ে যায়, যা একটু কাদামাখা তপ্ত জল থাকে, তাহাতে, একদিকে গরু বাছুর স্নান করিয়া জলের বিশুদ্ধতা সম্পাদন করে, অপর দিকে গ্রামের নরনারী দুপুরের রোদে স্নান করিয়া তৃপ্তি লাভ করে, এবং সেই জল পান করিয়া তৃষ্ণ নিবারণ করে । নগরবাসীরা অনেক স্থলে, সুবিধা সত্ত্বেও সভ্যতার খাতিরে অবগাহন স্নান করেন না বটে, কিন্তু পল্লীবাসীরা হিতকর বিবেচনায় জলে নামিয়া স্নান করেন । আগে । অনেক ধৰ্ম্ম প্ৰাণ ব্যক্তি সৰ্ব্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য পুণ্যকৰ্ম্ম বিবেচনায় জলাশয় খনন করাইয়া উৎসর্গ করিতেন, কিন্তু এখন আর সে ধৰ্ম্মভাব। নাই, এখন পুণ্যের স্রোত অন্য দিক দিয়া প্ৰবাহিত হইতেছে। সুতরাং এইরূপ নূতন জলাশয় এখন আর বড় হইতেছে না। পুরাতন যা আছে, তাহাও সংস্কারাভাবে অব্যবহাৰ্য্য। গ্ৰাম্য ধুরন্ধরগণ কার নামে নালিশ করিবে, কার বিরুদ্ধে মিথ্য সাক্ষ্য দিবে, কার ধোপা নাপিত বন্ধ করিবে, কারে একঘ'রে করিবে, এই সব মহাব্যাপার নিয়া দিনরাত, মহা ব্যস্ত ! জলাশয়সংস্কার তাহাদের কল্পনার ত্ৰিসীমায়ও আসে না ৷ পাটোয়ারি বুদ্ধি ইহাদিগকে মাতবর করিয়াছে, তাই ইহারা নিজকে বড় মনে করে ; কিন্তু বোঝে না যে, ইহাদের জীবন পৰ্ব্বলের ন্যায় পন্ধিল, ক্ষুদ্র ও তপ্ত। সুখের বিষয় এই যে, সদাশয় গবৰ্ণমেণ্ট বা স্থানীয় বোর্ড । জলকষ্ট নিবারণের জন্য নানা স্থানে জলাশয় খনন করাইয়া দিতেছেন ।