পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So 5-६ ।। ভোগ ? স্ত্রী পুত্ৰাদি কেহই নাই, এমন ধনীর কি সুখ ? সুখে সুখী, দুঃখে দুঃখী, এমন একজন ও যার নাই, ধনরাশি তাহাকে কি সুখ দিতে পারে ? কৰ্ত্তব্যপরায়ণ গৃহস্থ স্বোপার্জিত অর্থে স্ত্রী পুল্লাদি পরিবার বর্গের অভাবমোচন ও ভরণপোষণ করিয়া আনন্দ অনুভব করেন । প্ৰত্যেক পরিজনের কল্যাণ বিধান, উন্নতি ও সুখ সাধন প্ৰভৃতি কৰ্ত্তব্য পালন করিয়া উদারবৃদ্ধি গুঙ্গী ক'ত সুখী হইয়া থাকেন। পরিজন লইয়াই ভোগ, পরিজনশূন্য হইয়া ভোগ হয় না । যিনি যে সমাজের লোক, সেই সমাজ তাহার এক সুবৃহৎ পরিবার। সেই সমাজরূপ বিপুল পরিবারস্থ দুর্গত পরিজনবর্গের অভাব মোচন ও অর্থকষ্ট দূর করিবার প্রশংসনীয় চেষ্টায় ধনবানের ধানের সার্থকতা। এই বৃহৎপরিবারভুক্ত, ক্ষুধিত, নিরন্ন ব্যক্তির আশু ক্ষুধা-তৃষ্ণ নিবারণে ও স্থায়ী মঙ্গল সাধনে ধনের সার্থকতা। অর্থের অভাবে কত লোক স্বীয় স্বাভাবিক প্ৰতিভা বিকাশ করিতে না পারিয়া সাগরগর্ভস্থ রত্নের ন্যায় আঁধারে ডুবিয়া যায়! দারিদ্র্যের প্রবলপীড়নে কত কৰ্ম্মঠ লোক উচ্চতর কৰ্ত্তব্যসাধন করিতে না পারিয়া কত মনঃকষ্টে জীবন কাটায়। কত মানুষ মনুষ্যত্ব হারায় ! এ অবস্থায় সমাজের বিশেষ ক্ষতি । সমাজের ক্ষতিতে ধনীরা সকলেই নিজের ক্ষতি বলিয়া মনে করিলে সমাজের দুঃখভার অনেক কমিতে পারে। একজন ধনী অপর দশজনকে ধনী হইবার সহায়তা করিলে নিশ্চয়ই তিনি সমাজের আশীৰ্ব্বাদভাজন হইবেন । বিদ্যার অপপ্রয়োগে যেমন নিজের ও পরের অকল্যাণ, সেইরূপ ধানের অপব্যবহারে উভয়েরই অমঙ্গল । অলস দীর্ঘসূত্রী ব্যক্তি যেমন সময়ের মূল্য বোঝে না, সেইরূপ অবিবেচক অপরিণামদর্শীব্যক্তিও অর্থের মূল্য না বুঝিয়া অপব্যয় করিয়া আত্মরক্ষার পরিবর্তে আত্মহত্যা, আত্মোন্নতির পরিবর্তে আত্মাবনতি করিয়া থাকে।