পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Ν8 কলাবিদ্যা । মন যখন শ্ৰম করিয়া করিয়া ক্লান্ত হইয় পড়ে, তখন শরীরকে একটা কাজ দিলে মনের বিশ্রাম হয়। আন্দার শরীরটা যখন খাটিয়া খাটিয়া অবসন্ন হয়, তখন সে বসিয়া থাকিতে চায়, কিন্তু মন নিষ্কৰ্ম্মা তইয়া থাকিতে পারে না। মন বড় চঞ্চল। তুমি কোন কাৰ্য্যে লিপ্ত থাক। আর নাই থাক, মন কখনও নিশ্চিন্ত থাকিতে পারে না । মনের কাৰ্য্য চিন্তা প্ৰায় সর্বদাই হইয়া থাকে । কায়িক শ্রমকালে উহা বড় একটা বুঝা না গেলেও, বিশ্রামাগা একাকী, শ্রমশূন্য, অলস হইয়া বসিয়া থাকিলে, বেশ বঝা যায়। সুতরাং বিশ্রামকালে মনকে একটা বিষয় দেওয়া চাই । এমন একটা বিষয় দেওয়া দরকার, যাহাতে তার বিমল আনন্দ জন্মে, যাচাতে সে অজ্ঞাতসারে সানন্দে উন্নতি ও মঙ্গলের দিকে অগ্রসর হইতে পারে । নিদ্ৰাকাল ব্যতীত কখনও বিশ্রাম কন্মাচীন বিশ্রাম হওয়া উচিত নয় । কৰ্ম্মহীনতা বা আলম্ভের নাম বিশ্রাম নহে । বৃথা কালাহরণকে বিশ্রাম বলা যায় না । একপ্রকার কঠিন পরিশ্রম হইতে অন্য প্ৰকার আমোদজনক লঘুশ্রমের নাম বিশ্রাম। সংসার-চিন্তা-ভারাক্রান্ত, দিবসের অসার বা অযথা শ্রম-ক্লান্ত, বিভ্রান্ত বাঙালীর বিশ্রাম কোথায় ? বাঙালী এক দিকে অলস-প্ৰকৃতি, অন্য দিকে স্বল্প লাভের তরে গুরুবিরস, বুদ্ধির প্রখরতা নাশক, অগ্নিমান্দ্যকারক, জাড্যজনক, একরূপ শ্রমে অভ্যস্ত; সুতরাং বিশ্রামসুখে বঞ্চিত । বাস্তবিক অবসরকাল কাটাইবার কৌশল আমাদের একপ্রকার অবিদিত । বৃথা গল্পে, পরনিন্দায়, তাসপাশাখেলায়, আমাদের অনেকের অবসরকাল কাটিয়া যায়। ইহাতে যে সুখ তাহা দুঃখের নামান্তর ; অপর উন্নত সমাজের বিশ্রাম সুখের তুলনায় অতি নিকৃষ্ট। সঙ্গীতাদি, কোন একটী বিশুদ্ধ আমোদজনক সরস বিষয় লইয়া, ধীমান সুরসিক ব্যক্তি বিশ্রামকাল কৰ্ত্তন করেন।