পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজা ও সমাজ । Σ δώ. ਤਣ | “গানাৎ পরাতরং নাহি ।” সঙ্গীত অপেক্ষা চিন্তদ্রবকারী উৎকৃষ্টতর বিষয় আর কিছুই নাই। বিশ্রাম ভোগের পক্ষে সঙ্গীত অত্যন্ত উপযোগী। সঙ্গীতের মোহিনী শক্তি অনিৰ্ব্বচনীয়। ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ বলিয়াছেন, “বেদনাং সামবেদোহ স্মি” । আমি বেদ সকলের মধ্যে সামবেদ । একথার বোধ হয় ইহাই তাৎপৰ্য্য যে, সাম গীত হইয়া থাকে, ইহাতে লোকের মন ভগবানেব প্ৰতি যেরূপ আকৃষ্ট হয়, অন্য আর কোন মন্ত্রাদিতে সেরূপ হয় না। কৃষ্ণের মুরলীরবে গোকুল পুলকিত হইত, ওরাফিয়স (Orpheus)এর গানে পশুপক্ষী পৰ্য্যস্ত মোহিত হইত। তানসেনের সঙ্গীত মোগলকুলতিলক সম্রাট আকবরের সভাকে উৎসবময় করিত। ভক্তকবি রামপ্রসাদের গানে পাষাণহৃদয় গলিয়া যাইত। মধুর সঙ্গীত-রল, শ্ৰবণ-বিবরে প্রবেশ করিয়া তাড়িতবেগে হৃদয়-যন্ত্র আলোড়িত করিয়া, দেহ-প্ৰাণ-মন অপূৰ্ব্ব পুলকে পূর্ণ করিয়া তোলে, দুংসহ শোকসন্তাপ মুহুৰ্ত্ত মধ্যে বিদূরিত করে। ধৰ্ম্মোপদেষ্ট শত সহস্র উপদেশে যে ধৰ্ম্মভাব মানবহৃদয়ে জাগাইতে সমর্থ নহেন, সঙ্গীত ক্ষণকাল মধ্যে তাত পারে। দার্শনিক শত ধৰ্ম্মব্যাখ্যায় যাহা পারেন নাই, মহাপ্ৰভু শ্ৰীগৌরাঙ্গের হরিসংস্কীৰ্ত্তন তাহ পারিয়াছে। সঙ্গীত মরুময় দেশের ওয়েসিস (মরূদ্যান)। ইন্দ্ৰজালের ন্যায়। ইহার ক্রিয়। ইহাতে কে না মুগ্ধ, হয় ? মহাদেবের নিবা তি-নিষ্কম্প-প্ৰদীপ’বং চিত্তও নারদের বীণাগানে টলিত। শিশু-যুবা, প্রৌঢ়-স্তবির, স্ত্রী-পুরুষ, এমন কি, তিৰ্য্যকজাতিও সঙ্গীতে আকৃষ্ট হইয়া থাকে। ত্রুর সর্প ও বংশীরবে আত্মহারা হয়। রণ-সজ্জায় সজ্জিত সৈনিকদিগের হৃদয় রণবাদ্যনিনাদে কি এক মত্ততায় নাচিয়া উঠে। তখন তাহারা প্ৰাণের মমতা ভুলিয়া যায় ।