পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজা ও সমাজ । SSS

  • রসে ভরপুর বলিয়া বোধ থাকে, তখন হৃদয় কাননে কবিতাকুসুম ফুটিয়া উঠে। আর বিরসা বাৰ্দ্ধক্যে যখন নিরাশার উষ্ণতাপে হৃদয়-মন দগ্ধ হইতে থাকে, তপন কবিতাকুসুমও মান হইয়া যায়। সেইরূপ সমাজের বাল্যে ও প্ৰথম যৌবনাবস্থায় কবিতার সৃষ্টি ও বিকাশ, প্ৰৌঢ়াবস্থায় সত্যতার বৃদ্ধিতে কবিত্ব মান হইতে দেখা যায়। সভ্যতার তীব্র প্রখরতাপে কবিতার কোমল প্ৰাণ আইঢ়িাই করে ।

একথা সত্য যে, আদিম ঋজু সমাজে আন্দীে জীবনসংগ্রাম ছিল না, তখন লোকে কাব্যামোদ উপভোগ করিবার যথেষ্ট সুযোগ ও অবসর পাইত। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ, জ্ঞান-বিজ্ঞান-সমৃদ্ধ, জটিলতা-বহুল সভ্যসমাজে লোক জীবনযুদ্ধে ব্যাপৃত থাকিয়া আর সেরূপ কাব্যের অনুশীলন ও রসা স্বাদ করিতে সমর্থ হয় না । আবার, ইউরোপীয় সভ্যতার উন্নতির যুগেই সেক্ষপির, মিণ্টন, ওয়ার্ডওয়াগ আিস, টেনিসন, কাব্য রাজ্যের রাজা। ভারতবর্ষে ও সভ্যতার উৎকর্ষকালেই বাল্মীকি, বেদব্যাস, ভবভূতি, কালিদাস, কাব্যজগতের রাজাধিরাজ চক্ৰবৰ্ত্তী। ইংলণ্ডীয় সভ্যতার ছায়ায় মধু, হেম, নবীন, রবীন্দ্ৰ উজ্জল কবিৰত্ন। তবেই সভ্যতায় কবিতার উন্নতি কি অবনতি, এ বিষয়ে মতদ্বৈধ হওয়ারই সম্ভাবনা। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, ক্রমশঃই কাব্যপিপাসুর সংখ্যা-হ্রাস হইতেছে । কাব্যে যদি কেবল রসই পাওয়া যায়, তবে কাব্যরসিকের সংখ্যা-হ্রাস কেন ? সকলেই ত রস চায়। এক কারণ, অবকাশের অভাব, তাহা পূর্বেই বলা হইয়াছে। আর একটী কারণ, কাব্য ছাড়িয়াও অন্যান্য বহুতর বিষয়ে লোকে আজকাল রস পাইতে চেষ্টা করে। “রসো বৈ সঃ”। ব্ৰহ্ম রসম্বরূপ, তথাপি ব্ৰহ্মরস ছাড়িয়া লোকে বিষয়রসে ডুবিয়া থাকিতে লালায়িত কেন ? আবার, কাব্যরস পান করিতে ইচ্ছা করিলেই