পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

δ8 δ পূজা ও সমাজ । তবেই প্রথম ও তৃতীয় প্রকারের কৰ্ম্মই কৰ্ম্ম, দ্বিতীয় প্রকারের কৰ্ম্ম বিকৰ্ম্ম-বিরুদ্ধকৰ্ম্ম-ইহার ফল অমঙ্গল। প্রথম ও তৃতীয় প্রকারের কৰ্ম্মকে ধৰ্ম্ম বলা যায়, সুতরাং অনুষ্ঠেয়। দ্বিতীয় প্রকারের কৰ্ম্ম, অধৰ্ম্ম । সুতরাং ত্যাজ্য। কৰ্ম্মের গুরুত্ব লঘুত্ব অনুসারে ধৰ্ম্ম উচ্চ ও অনুচ্চ। উচ্চাঙ্গের ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেষ্ট মানুষের মনুষ্যত্ব ও মহত্ত্ব । শক্তি থাকিলেই ক্রিয়া বা কৰ্ম্ম থাকিবে। কৰ্ম্মই শক্তির পরিচায়ক, কৰ্ম্মই শক্তির পরিমাপক। কার কি রকম, কতটুকু শক্তি আছে, তাহা তার কৰ্ম্ম দ্বারাই আমরা বুঝিয়া লই। যতক্ষণ জীবদেহে জীবনীশক্তি থাকে, ততক্ষণ তাহার ক্রিয়া আছে। নিজীবদেহের ক্রিয়া নাই, যেহেতু শক্তি নাই। শক্তিহীনেব কৰ্ম্মে অধিকার নাই, অথবা কৰ্ম্মে যার অধিকার নাই, সে শক্তি হীন, শ্ৰীহীন। নি গুণ ব্ৰহ্ম নিস্ক্রিয়, কিন্তু তিনি শক্তিশূন্য নহেন। সেইরূপ, যে কোন জীব নিষ্কৰ্ম্ম, নিস্ক্রিয় হইয়াও শক্তিশালী হইতে পারে না কি ? একথার উত্তর এই যে, নিগুণ ব্ৰহ্ম আমাদের বোধের অগম্য, কৰ্ম্মহীন জীব ও আমাদের বোধ্যাতীত ? কৰ্ম্মানুষ্ঠানে শক্তির বৃদ্ধি, বদ্ধিত শক্তিতে কৰ্ম্মের মাহাত্ম্য বৃদ্ধি। শক্তিপূজার এই সারাতত্ত্ব আর কৃষ্ণোক্ত কৰ্ম্মযোগের একই তাৎপৰ্য্য। ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ কৰ্ম্মের ভূয়সী প্ৰশংসা করিয়াছেন, এবং কৰ্ম্মানুষ্ঠানের নিমিত্ত বিশ্বমানবমণ্ডলীকে লক্ষ্য করিয়া অৰ্জ্জুনকে উপদেশ দিয়াছেন। দুঃখের বিষয়, আমরা কৰ্ম্মযোগ বুঝি না, বুঝিরা পালন করিতে ইচ্ছা করি না। আরও দুঃখের বিষয় এই যে, অনেক ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তি, কৰ্ম্মযোগ এ যুগের ধৰ্ম্ম নহে, কারণ ইহা বড় কঠিন, ইহার অনুষ্ঠানে পুরুষত্ত্বের আবশ্যক, এইরূপ উপদেশ দিয়া কৰ্ম্মবিমুখ বাঙালীকে কৰ্ম্মবিরত রাখিতে প্ৰয়াল পাইয়া থাকেন। পুরুষত্রে প্রয়োজন, অতএব কৰ্ম্মমার্গ শ্ৰেয়ঃ নহে ; মনুষত্বের স্বাস্থ্যকর বিকাশ হয়, অতএব