পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাটুতা । S A y কাজেই, অনুগ্ৰহ-জীবীর ক্ষণে স্বৰ্গসুখ, ক্ষণে নরকভোগ। এই গাঢ় প্ৰমালিঙ্গনসুখ, এই অৰ্দ্ধচন্দ্ৰভোগ । চাটুতার এই সঙ্কটাবস্থা স্মরণ করিয়াই বুঝি কবি বলিয়াছেন,- “অব্যবস্থিতচিত্তস্ত প্ৰসাদোহ পি ভয়ঙ্করাঃ ।” অর্থাৎ অস্থিরমতি মানুষের অনুগ্রহের মধ্যেও ভয় আছে । সাবধান । দুঃখের বিষয়, চাটুতা ইহা বুঝিয়াও বোঝে না ; সে বড় নির্লজ্জ । যে সমাজে চাটুতার জয়জয়কার, সেখানে গুণের অনাদর না হইয়া সমাদর হইবে, ইহা সম্ভবপর নহে। সেখানে গুণ, বনজকুসুমের ন্যায়, লোক-লোচনের অন্তরালে থাকিয়া, বিফলে সৌরভ ঢালিয়া, অন্তস্তাপ লইয়াই যেন ঝরিয়া পড়ে। সেখানে মান-অপমান জ্ঞান নাই ; আছে, যেনি-তেন প্রকারেণ স্বীকাৰ্য্যসাধন । “অপমানং পুরস্কৃত্য মানং কৃত্ব চ পৃষ্ঠকে । স্বীকাৰ্য্যমুদ্ধরে ৎ প্ৰাজ্ঞঃ কাৰ্য্যধ্বংসশ্চ মুখত ৷” অর্থাৎ অপমানকে সম্মুখে ও মানকে পশ্চাতে রাখিয়া বুদ্ধিমান ব্যক্তি নিজকাৰ্য্য উদ্ধার করিবেন। কাৰ্য্যধ্বংসে মুখতা। ইহা কাপুরুষের কথা। কিন্তু পুরুষের কথা—“দিব প্ৰাণ, না দিব মান’। রাণাপ্ৰতাপ, সর্বস্ব দিতে, প্ৰাণ দিতে প্ৰস্তুত ছিলেন ; কিন্তু কিছুতেই মান দিতে রাজি ছিলেন না । গুণন্তুতিপরায়ণ মন যদি একশহাত উপরে ওঠে, নিগুণতার স্তুতিশীল মন পাচশহাত নীচে নামে। নিগুণের উপাসনা করিয়া ২ মানুষের মন কেবলই অধোগামী হইতে থাকে। গুণের উপাসনায়, সৰ্ব্বগুণাধার ঈশ্বরের আরাধনায়, মন উৰ্দ্ধেই ওঠে। সকাম অপেক্ষা নিষ্কাম উপাসনা।