পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজা ও সমাজ । ܘ ܐ ܕ কিন্তু এইরূপ অধ্যয়নকে তপস্যা বলা যায় না । অধ্যয়ন অর্থে মন ও মস্তিষ্কের শক্তি বৰ্দ্ধন, শক্তির বিলোপসাধন নহে । অপরাপর কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্মে অবহেলা করিয়া সারাদিন কেবল পুস্তক লইয়া থাকা অন্যায় বটে, কিন্তু সদ্যগ্রন্থ পাঠে দিবসে অন্ততঃ দুই ঘণ্টাকাল কৰ্ত্তন করা সময়ের অপব্যবহার নহে। গহে রুদ্ধবায়ুর ন্যায় সংসারে আবদ্ধ মন দূষিত হইতে থাকে। আমরা যে সংসার-ঘর বাধিয়াছি, যাব চারিদিকে শক্ত বেড়া দিয়া রাখিয়াছি, সদ্যগ্রন্থ সেই ঘরের জানালা-ক বাট খুলিয়া দেয়। তৈলতণ্ডুলচিন্তাকুল, বদ্ধ আবিল মন তখন মক্তগগনে। বিচরণ করিয়া শুদ্ধ হয়, স্বস্তি পায়। প্ৰতিদিন ধনাৰ্জন, প্ৰতিদিন পুণ্যসঞ্চয়ন ; প্রতিদিন জ্ঞানার্জন, প্রতিদিন বিতরণ গৃহীর কৰ্ত্তব্য। প্রতিদিন ক্ষুধা জন্মে, প্ৰতিদিনই খাইতে হয়। ক্ষুধা না জন্মিলে, শরীর-যন্ত্রে গোলযোগ ঘটিয়াছে বুঝিতে হইবে। সেইরূপ প্ৰতিদিন মনের ও আত্মার ক্ষুধার উদ্রেক হওয়া এবং প্রতিদিন ক্ষুধার নিবৃত্তি করা আবশ্যক। ক্ষুধা না জন্মিলে উহারা প্ৰকৃতিস্ত নাই, বুঝিতে হইবে। প্রত্যহ নির্দিষ্ট সময়ে, উপনিষৎ, গীতা বা তাঙ্গুলা অন্য কোন ধৰ্ম্মগ্রন্থ শুচি-শান্তি-মনে, ভক্তিভাবে পাঠ করা গঙ্গীমাত্রেরই কৰ্ত্তবা। ভগবৎ-ক্লাশয়, যাহার এমন শুভমুহূৰ্ত্ত আসিয়া উপস্থিত হয়, যখন তিনি ভগবানের মঙ্গলমূৰ্ত্তি দর্শন করিয়া পুলকিত, পবিত্র হন, তখন আর তাহার গ্রন্থের প্ৰয়োজন থাকে না । দিবালোকে দীপালোক নিরর্থক । কি লক্ষ্য মহান ? ভূমা ভগবান। তীর্থের তীর্থ, সাধুর সাধু, বিশ্ববন্ধু ভগবানের সঙ্গলাভ করাই মানব জীবনের মহান লক্ষ্য। সেই মহাসাধুর সঙ্গলাভ করিতে পারিলেই গ্ৰন্থপাঠ সম্পূর্ণ সার্থক । জীবন সাৰ্থক । em