পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিক্ষার উপরই সমাজের ভাবী মঙ্গলামঙ্গল, উন্নতি অবনতি সম্পূর্ণ নির্ভর করে। শিক্ষাদানের জন্য উপযুক্ত শিক্ষকের আবশ্যক। সুশিক্ষকের উপর শিক্ষার ভার ন্যস্ত হইলেই শুভ ফল, অন্যথা কুফল। ভগবান মানবশিশুর দেহ-মাটীতে মনুষ্যত্বের বীজ বপন করিয়াছেন, তাহা অঙ্কুরিত, পরিপুষ্ট ও ক্রমে ফুলে-ফলে পরিশোভিত, সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর মহান বৃক্ষে পরিণত করাই শিক্ষকের কৰ্ম্ম । কুস্তকার। যেমন কঁাদামাটা লইয়া, গড়িয়া-পিটিয়া মনোমত মনোহর মৃন্ময়ী মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া থাকে, সেইরূপ শিক্ষকও শিশুর কঁচা দেহ-ও-মন-মাটি লইয়া সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর, পূর্ণাবয়ব মুক্তি গড়িবেন, –এবং সেই মূৰ্ত্তিতে প্ৰাণ প্রতিষ্ঠা করিবেন। শিক্ষককে সুদক্ষ মালী, কুম্ভকার ও পুরোহিত হইতে হইবে। পশুত্ব ঘুচাইয়া মনুষ্যত্ব প্ৰদান করা, মানুষ করিয়া তোলা, শিক্ষকের কন্ম ! শিশু। পৃথিবীতে আসিয়া কেবলই জানিতে চায়। যাহা দেখে, তাহাই আশ্চৰ্য্য বোধ করে। জানিবার এই আকাজক্ষা কৌতুহল, এই স্বাভাবিক জ্ঞানবৃত্তি চরিতার্থ করা এবং উত্তরোত্তর বদ্ধিত করা শিক্ষকের কৰ্ম্ম । অবোধ শিশু আগুন দেখিয়া আগুনে হাত দিতে যায়, চূণ দেখিয়া চুণ মুখে দিতে হাত বাড়ায়, তখন শাসন বারণ আবশ্যক, নহিলে বিপদ । জ্ঞানবৰ্দ্ধন ও শাসন বারণ শিক্ষকের কৰ্ম্ম । শিশু যে কেবলই জানিতে চায়, শিখিতে চায়, সে শিক্ষার ভার কাহার উপর ন্যস্ত ? যিনি জ্ঞানবৃত্তি দিয়াছেন, তিনিই ইহার ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছেন। তিনি এই শিক্ষাকাৰ্য্যে জননীকে নিযুক্ত করিয়াছেন । ঈশ্বর-নির্দিষ্ট এই স্বাভাবিক কৰ্ত্তব্য কয়জন বঙ্গীয়জননী সুচারুরূপে সম্পাদন করেন ? কিন্তু ইহার জন্য দায়ী কে ? সমাজ রমণীদিগকে যুত্বপূর্বক অজ্ঞ করিয়া রাখিয়াছে, -