পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిరిసి পূজা ও সমাজ । প্ৰজাবৃদ্ধি হয় না। এই স্বাভাবিক নিয়মের অনুবন্ত্ৰী হইয়া মানবজাতি ভিন্ন ভিন্ন দেশে সমাজের কল্যাণতরে বিশেষ বিশেষ শাস্ত্রীয় বিধির প্ৰণয়ন পূর্বক স্ত্রীপুরুষের মিলন বিধান করিয়াছেন। ইহারই নাম “বিবাহ সংস্কার’। জন-সমাজে কোনরূপ বিশৃঙ্খলা না জন্মাইয়া নির্বিরোধে যেন প্ৰজাবৃদ্ধি ও সুখসমৃদ্ধি হইতে পারে, এই উদ্দেশ্যে বিবাহপদ্ধতি প্ৰচলিত হইয়াছে। সৃষ্টিরক্ষা ও প্ৰজাবৃদ্ধি ভগবানের অভিপ্ৰায়। জাতীয় বলাবল কতকটা লোকসংখ্যার উপর নির্ভর করে, কিন্তু অন্যান্য জাতির তুলনায় হিন্দুর আশানুরূপ সংখ্যাবৃদ্ধি হইতেছে না। আবার, লোকসংখ্যার বৃদ্ধি হইলেই যে সুখসমৃদ্ধির বৃদ্ধি নিশ্চয়ই হইবে, এমন কোন কথা নয়। দুর্বল, রুগ্ন। স্ত্রীপুরুষ লইয়া যে সমাজ গঠিত হয়, সে সমাজে শ্ৰীবৃদ্ধির আশা করা: বাতুলতা মাত্র। বাঙালীর দুর্বলতা চির প্রসিদ্ধ হইলেও ইদানীং তাহা দ্রুতপদে বাড়িয়া যাইতেছে। এবং সঙ্গে সঙ্গে অকালমৃত্যুকে ডাকিয়া আনিতেছে। ক্রমোন্নতি যদি প্ৰাকৃতিক নিয়ম হয়, তবে দুর্বলতা বাধা না পাইলে, উন্নতি লাভ করিবে, ইহা নিশ্চয় । বঙ্গসমাজে তাহা হইতেছে। এই দুর্বলতার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ । বিবাহের বয়স । বিবাহ শব্দের অর্থ ( বি-বঙ্গ + ঘঞ ) স্ত্রীপুরুষের পরস্পর দম্পতিরূপে মিলন। এস্থলে ‘বহা’ ধাতু প্ৰাপণার্থক । মিলনের এই প্ৰকৃত কাল প্ৰকৃতিই নিৰ্দ্ধারণ করিয়া দিয়াছেন। স্ত্রীপুরুষ উভয়েই যখন পূর্ণাঙ্গ, পূর্ণেন্দ্ৰিয় হয়, তখনই বিবাহের উপযুক্ত কাল। অঙ্গ প্ৰত্যঙ্গের অপূর্ণ অবস্থায় মিলন অকাল । প্ৰকৃতির এই নিয়ম উদ্ভিজ্জ ও তিৰ্য্যাগ জাতি পালন করিয়া থাকে। মানবের পক্ষেও অবশ্যপালনীয়।