পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুৰ্গোৎসব । শারদীয় দুর্গাপূজা বঙ্গের অতুলনীয় মহোৎসব । আজ সেই উৎসবের দিন সমাগত। কি একটা আনন্দ প্রবাতে আজি সমগ্রদেশ প্লাবিত। প্ৰকৃতিদেবী নেন। সেই উৎসবে যোগদান করিয়া কি এক অপূর্ব পবিত্র শোভা বিস্তার করিতেছে। প্ৰসন্ন সলিলা সরাসীর লক্ষে ঢল ঢল প্ৰফুল্লকমল মৃত্যুমারু তহিল্লোলে হেলিয়া দুলিয়া খেলিতেছে। স্থলপদ্ম, শেফালিকা প্ৰভৃতি কুসুম ফুটিয়া ভূমিভাগ আমোদিত করিতেছে । বর্ষার সেই বারিধারা নাই, তুমুল কর কাসম্পাত নাই, অশনির ভীষণ গর্জন নাই, জলপ্লাবন নাই, পথে কদম নাই, আছে কেবল মধ্যে মধ্যে নিৰ্ম্মল আকাশে নিরস্তু-ধবল মেঘের ধ্বনি। প্ৰকৃতি আজ হাস্যময়ী। বঙ্গের ঘরে ঘরে আনন্দ লহরী উঠিতেছে । আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই সমভাবে বিমল আনন্দে মাতোয়ারা । বৎসরান্তে আত্মীয়স্বজনের সহিত মিলনআশায় মাসাধিক কাল পৰ্ব্ব হইতেই প্ৰবাসী উৎসুক চিত্রে পূজাব দিন প্ৰতীক্ষা করিতেছিল। বৃদ্ধ জনক জননী পুল্লেব নিরাপদে গৃহ-প্রত্যাগমন কামনা করিয়া দেবতার নিকট মনে বা প্ৰাথনা জানাইতেছিলেন, প্রবাসীপতির সমাগম-আশে বিরক্রিণী কামিনী ব্যাকুল মনে দিন গণি তেছিল, শিশু-পুত্র পিতাব সমেত চুম্বন ও নব বস্ত্রের আশায় অধীর হইয়াছিল। অবশেষে পূজার “দন আসিল । ভগবতীব কৃপায় এক বৎসর পরে পুন- “ ন্মিলন হইল। আহা ! সে মিলন ক'ত সুখের ! কত মধুর । পতিপ্ৰণয়িণী, জনক-জননী, ভ্রাত|ভগিনী সকলে বা মনই কেমন একটা প্ৰেম, স্নেহ ও ভালদা,ার চুম্বকাকর্ষণে আকৃষ্ট ! সকলেই যেন প্ৰেমানন্দসুরা পান করিয়া মত্ত হইয়াছে। আজ সকলই মধুময় ! এ দৃশ্য দর্শনে বৈদিক যুগের সেই সারস-সরল আশা-উৎসাহিপূর্ণ জীবনসঙ্গীতটিী মনে পড়ে।