পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ყ9 O দুৰ্গোৎসব। বাহপ্রকৃতিতে, প্রতিমাতে বা হৃদয়াভ্যন্তরে ব্রহ্মসত্তা উপলব্ধি করিয়া প্ৰণবজপকারী যোগী, জ্ঞানী, ভক্ত বা কৰ্ম্মী যিনিই যে ভাবে সাকার বা নিরাকারের পূজা করুন না কেন, তিনি প্ৰকৃতপক্ষে শক্তিরই উপাসক। যিনি যে দেবতারই উপাসনা করুন না কেন, তিনি শক্তিরাই ভক্ত। তিনি শক্তিরই স্তব করেন, শক্তিরই কীৰ্ত্তন করেন, শক্তিরই ধ্যান করেন। মহাগ্রন্থের মহাবাক্য ও সাধুমহাত্মাদিগের বচনই যে কেবল শক্তির অস্তিত্বের প্রমাণ তাহ নয় ; উহা নিত্যপ্ৰত্যক্ষ সত্য । সৃষ্টির পূর্বের অবস্থা আমাদের বোধ্যাতীত। তাহা দার্শনিকের আলোচ্য হইতে পারে, আমাদের নহে । আমরা কিন্তু জন্মিয়াই জগৎ দেখিতেছি । আমরণ জগতের সঙ্গেই আমাদের মাথা মাখি ভাব । জগতে আমরা প্ৰতিদিন, প্ৰতিক্ষণ, পলে পলে, শক্তির ক্রিয়া দেখিয়া আসিতেছি। শূন্যে, বিনাসূত্রে কোটী কোট ক্ষুদ্র বৃহৎ প্ৰাণীবিশিষ্ট সশৈলী সসাগরা ধরিত্রী সুৰ্য্যের চতুদিকে প্রতিনিয়ত ঘুরিতেছে। ইহা শক্তিরই কাৰ্য্য । এই যে প্ৰভাতে বাল সুৰ্য্য উদিত হইয়া, মধ্যাহ্নে মাথার উপর উঠিয়া খরতের কিরণ বিকীরণ করিয়া ধীরে ধীরে সায়ংকালে সমুদ্রের অতলজলে ডুবিয়া যায়, এ কাহার কার্য্য ? শক্তির। সন্তান ভূমিষ্ঠ হইয়াই স্তন্যপূর্ণ মাতৃস্তন পান করিয়া দিন দিন বদ্ধিত হইতে থাকে ; কাননে কত কুসুম ফুটিয়া চতুর্দিক সুরভিত করে ; সূক্ষ্ম ক্ষুদ্র বীজ দিগন্ত-বিসারি শাখাপ্ৰশাখাবিশিষ্ট ফলপল্লবশোভিত মহামহীরুহে পরিণত হয় ; এ সকল কাহার কাৰ্য্য ? শক্তির। মহাসিন্ধু অজগরতুল্য তরঙ্গ-বাহু উদ্ধে উত্তোলিনা করিয়া জলদগম্ভীর স্বরে বলিয়া থাকে,-শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী আছেন । ঘোর ঘনঘটা গগন ছাইয়া বজনির্ঘোষে বলিয়া দেয়, শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী আছেন। চকিতে চপল বিকট হাসি হাসিয়া বলিয়া যায়, শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী আছেন। প্ৰবল