পাতা:পূজা ও সমাজ - অবিনাশচন্দ্র চক্রবর্ত্তি.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজা ও সমাজ । لان বাতা প্ৰবাহিত হইয়া প্ৰাসাদ ও পাদপ উৎপাটিত করিয়া তুমুলশব্দে বলিয়া যায়, শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী আছেন। বালারুণ, উষার সুষমা লইয়া হাসিয়া বলে,—শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী । আছেন। তার কাবেষ্টিত শারদচন্দ্ৰমা নিৰ্ম্মলগগনে হাসিয়া বলে, শক্তি আছে, শক্তিরূপিণী বিশ্বজননী আছেন। মানব যখন বিপৎসাগরে পড়িয়া কুল কিনারা পায় না, তখন কে যেন প্ৰাণের ভিতর থাকিয়া বলিতে থাকে, ভয় নাই, আমি আছি। মানব যখন পাপে ডুবিয়া অধঃপাতে যাইতে থাকে, তখন কে যেন অস্ফুটম্বরে ভিতর হইতে বলিতে থাকে, আর পাপের পগে যাইও না, আর ডুবিও না, একবার আঁখি মেলে দেখি, এই যে আমি আছি । সৃষ্টির আরম্ভ হইতে শক্তির ক্রিয়া অবিরত চলিতেছে। ব্ৰহ্ম এক, নিত্য, মহান, বিশ্বব্যাপী ; তাহার শক্তিও একা, নিত্যা, মহতী, বিশ্বব্যাপিনী। ব্ৰহ্ম কখনও শক্তি হইতে বিচু্যত নহেন। ব্ৰহ্ম ও তদীয় শক্তি একান্ত একীভূত। শক্তি ও শক্তিমান যে অভিন্ন তাহা জাগতিক পদার্থে দেখিতে পাওয়া যায়। শক্তিমান যে অবশেষে শক্তিমাত্ৰে পৰ্য্যবসিত হয় তাহাও প্ৰত্যক্ষীভূত । কুম্ভকার কলস গড়িল, একথার অর্থ এই যে কুম্ভকারের শক্তিতে উহা তৈয়ার হইল। প্রথমতঃ কুম্ভকারের ইচ্ছা, তারপর মৃত্তিক লইয়া, ক্রিয়া । হস্তদ্বারা মাটিকে পিটিয়া পিটিয়া কলসনিৰ্ম্মাণকালে হন্তের বল প্ৰয়োগ করা হইয়াছিল; হস্ত যদি বাতব্যাধিগ্ৰস্ত হইয়া অবশ অসাড় হইত, তবে কলস নিৰ্ম্মাণ অসম্ভব হইত। কুম্ভকারের ইচ্ছাশক্তি ও হস্তাদি দেহাবয়বশক্তিই কলস গড়িয়াছে। এই প্রকার সর্বত্রই কাৰ্যের কারণ শক্তি, একথা বলা যাইতে পারে। অগ্নি বলিলে আমরা তাপ ও দাহিকাশক্তিই বুঝি। ঐ শক্তি না।