চিঠি
শ্রীমান্ দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
কল্যাণীয়েষু,
দূর প্রবাসে সন্ধ্যা বেলায় বাসায় ফিরে এনু,
হঠাৎ যেন বাজ লো কোথায় ফুলের বুকের বেণু।
আতি-পাতি খুঁজে শেষে বুঝি ব্যাপারখানা,
বাগানে সেই জুঁই ফুটেছে চিরদিনের জানা।
গন্ধটি তা’র পুরোপুরি বাংলা দেশের বাণী,
একটুও তো দেয় না আভাস এই দেশী ইম্পানী।
প্রকাশ্যে তা’র থাক না যতই শাদা মুখের ঢঙ্,
কোমলতায় লুকিয়ে রাখে শ্যামল বুকের রঙ্।
হেথায় মুখর ফুলের হাটে আছে কি তা’র দাম?
চারু কণ্ঠে ঠাই নাহি তা’র, ধূলায় পরিণাম॥
যূথী বলে, “আতিথ্য লও, একটুখানি বোসো।”
আমি বলি চ’ম্কে উঠে, আরে রোসো, রোসো;
জিৎবে গন্ধ, হার্বে কি গান? নৈব কদাচিৎ।
তাড়াতাড়ি গান রচিলাম; জানিনে কার জিৎ।
তিন্টে সাগর পাড়ি দিয়ে একদা এই গান,
অবশেষে বোলপুরে সে হবে বিদ্যমান।
এই বিরহীর কথা স্মরি’ গেয়ো সেদিন, দিনু,
জুঁই বাগানের আরেক দিনের গান যা র’চেছিনু