পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So ভারতবর্ষ । গৌরব অক্ষুন্ন রহিল ; কেহ বা কালস্রোতে ভাসিয়া বিস্মৃতির অন্ধতম গর্ভে নিমজ্জিত হইল! ভারতের একই চিত্রপটের একই অঙ্কে এইরূপ কত পরিবর্তনই প্ৰত্যক্ষীভূত। কেন এমন হয় ? এই উত্থান-পতনের-এই গৌরব-পদস্থলনের মূল অনুসন্ধান করিলে কি দেখিতে পাই ? দেখিতে পাই না কি ?-বুঝিতে পারি না কি ?--সত্য-ত্রেতা-দ্বাপরকলি চারি যুগে যিনি যখনই প্রতিষ্ঠার তুঙ্গশ্বঙ্গে আরোহণ করিয়াছেন ;-যে সাম্রাজ্য যখনই জগতের ইতিহাসে বরণীয় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করিয়াছে ;-তখনই তাহার মূলে, ধৰ্ম্মের প্রভাব বিদ্যমান রহিয়াছে। ভারতের ইতিহাসে উত্থান-পতনের প্রতিষ্ঠা-পদস্থলনের যে অঙ্কের প্রতিই দৃষ্টিপাত করি না কেন, সৰ্ব্বত্রই ধৰ্ম্মশক্তির সেই অভিনব ক্রিয়া প্রত্যক্ষ হয়। আমরা পুনঃপুনঃ বলিয়া আসিয়াছি,-ভারতের ইতিহাস—ধৰ্ম্মের ইতিহাস। তাই দেখিতে পাই, যখনই উচ্ছঙ্খলতা প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে, যখনই ধৰ্ম্মের গ্লানিতে অধৰ্ম্মের অভু্যুত্থান ঘটিয়াছে, তখনই ভারতের ইতিহাস অন্ধকারে সমাচ্ছন্ন হইয়াছে। আবার, যখনই ধৰ্ম্মের অভু্যদয়ে অধৰ্ম্মেব বিনাশ সাধিত হইয়াছে, তখনই অন্ধতমসাচ্ছন্ন গগনে বিদ্যুচ্ছটিার বিকাশ দেখিয়াছি। কিবা সাহিত্যে, কিবা ইতিহাসে, কিবা জ্ঞান-বিজ্ঞানে, কিবা কলাবিদ্যার ঔৎকর্ষ-সাধনে, সৰ্ব্বত্রই ধৰ্ম্মের প্রভাব পূর্ণ-প্রকটত। ফলতঃ, ধৰ্ম্ম ভিন্ন ভারতে কোনও বিদ্যাই স্মৃৰ্ত্তিলাভ করে নাই, ধৰ্ম্ম ভিন্ন ভারতে কোনও প্রতিভাই বিকাশ-প্রাপ্ত হয় নাই, ধৰ্ম্ম ভিন্ন ভারতে কোনও আদর্শই প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। অনাদি অনন্ত ‘প্ৰাগৈতিহাসিক যুগের’ কথা ছাড়িয়া দিয়া, যদি খৃষ্ট-জন্মের কয়েক শতাব্দী পূর্বের এবং তাহার পরবর্তী কয়েক শতাব্দীর বিষয় আলোচনা করি, তাহাতেও ঐ একই প্ৰমাণ প্ৰত্যক্ষ দেখি । 秦 诛 米 অধৰ্ম্মে উচ্ছেদ । আলেকজেণ্ডারের ভারতগমনের সময় হইতে পণ্ডিতগণ “ঐতিহাসিক যুগের’। সুচনা বলিয়া সিদ্ধান্ত করেন। সেই সময় হইতে কনিক্ষের ( কানিস্কের) রাজ্যকাল পৰ্য্যন্ত ভারতের অবস্থাপরম্পরার আলোচনা করিলেও, ধৰ্ম্মে প্ৰতিষ্ঠা অধৰ্ম্মে উচ্ছেদ-এতদুক্তির সার্থকতা দেখি । সে সময়ে শেষ-নন্দরাজগণ ভারতের সিংহাসনে সমাসীন ছিলেন । অর্থশাস্ত্রের প্রথম অধ্যায়ে, র্তাহাদের রাজ্যশাসনসম্বন্ধে একটী শ্লোক পরিদৃষ্ট হয়। সেই শ্লোক-পাঠেই বুঝিতে পারা যায়, ধৰ্ম্মের গ্লানি এবং অধৰ্ম্মের অভু্যুত্থানই নন্দরাজগণের অধঃপতনের একমাত্র কারণ। অর্থশাস্ত্ৰ হইতে সেই শ্লোকটী নিম্নে উদ্ধৃত হইল ; যথা,- “অপনীতো হি দণ্ডঃ মাৎস্তন্যায়মুদ্ভাবিয়তি । বলীয়ান বলং হি গ্ৰসতে দণ্ডধারাভাবে ॥” ইত্যাদি ৷ মগধের পূর্ব-গৌরবের অবসানে, নন্দরাজগণের কু-শাসনে, ধৰ্ম্মের গ্লানি সমুপস্থিত হইয়াছিল ; ব্যভিচার অরাজকতার প্রাবল্যে রাজ্যে হাহাকার উঠিয়াছিল,-আৰ্ত্তের সকরুণ ক্ৰন্দনে গগন বিদীর্ণ হইতেছিল। ফলে, অধৰ্ম্মের প্রাবল্যে ধৰ্ম্মের গ্লানি উপস্থিত হইয়াছিল। সে সময়, রাজশক্তি ও জনশক্তি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ; বহির্বিপ্লব অন্তর্বিপ্নবের ফলে রাজ্যে অরাজকতা * সমুপস্থিত; অনাচার-অবিচারের প্রবল বন্যায় দেশ পরিপ্লাবিত। ভারতের এই ঘোর দুদিনে,