পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

象心● ভারতবর্ষ । সিংহল- রাজ্যের দৌত্য । সমুদ্র-গুপ্তের দিগ্বিজয়-সুত্ৰে, বহু দিনের পর, পুনরায় ভারতের সহিত সিংহলের নৈকট্য স্থাপিত হয়। ৩৬০ খৃষ্টাব্দে সিংহলের বৌদ্ধ-নৃপতি শ্ৰী-মেঘবন্ন ( মেঘবৰ্ণ) ভারতে দুই জন বৌদ্ধ-ভিক্ষু প্রেরণ করেন। কথিত হয়, ভিক্ষুদ্বয়ের এক জন সিংহল-রাজের ভ্ৰাতা ছিলেন। বুদ্ধ গয়ায় বোধি-দ্রামের পুর্ব দিকে অশোক যে বৌদ্ধ-বিহার নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, সেই বৌদ্ধবিহার পরিদর্শন, তাহদের ভারতে আগমনের উদ্দেশ্য ছিল। তখন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ-বশতঃ, আগন্তুকদ্বয় ভারতে তাদৃশ সমাদর প্রাপ্ত হন নাই। সিংহলে প্ৰত্যাবৰ্ত্তনের পর তঁাহারা সিংহল বাজকে তদ্বিষয় বিজ্ঞাপিত করেন ৷ ‘বৌদ্ধাদিগের ভারতে আর স্থান নাই”-তখন তঁহার এই ভাব প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। পরন্তু রাজাকে বলিয়াছিলেন,-“তঁহারা ভারতে এমন কোনও স্থান পান নাই, যেখানে তঁাহারা স্বচ্চন্দে বাস করিতে পারেন ৷” রাজা মেঘবর্ণ এই অভিযোগে মৰ্ম্মাহত হন এবং ভিক্ষুদ্বয়ের প্রতি ভারত-বাসীর দুর্ব্যবহারের প্ৰতিকারের সঙ্কল্প করেন। ভারতে, বৌদ্ধদিগের তীর্থস্থানে বিহার-নিৰ্ম্মাণে যাত্রীদিগের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য-বিধানে সিংহলরাজ মেঘবৰ্ণ বদ্ধপবিকার হন । সেই উদ্দেশ্য-সাধন জন্য সমুদ্র-গুপ্তের দরবারে সিংহল-রাজ মেঘবৰ্ণ দূত প্রেরণ করেন। সেই উপলক্ষে সিংহল-দেশীয় প্ৰসিদ্ধ বহুমূল্য মণি-মাণিক্য উপঢৌকন প্রেরণে সিংহলরাজ মেঘবৰ্ণ বৌদ্ধদিগেব জন্য ভারতে বিহার-নিৰ্ম্মাণের অনুমতি প্রার্থনা কবেন । ঐতিহাসিকগণ বলেন,-সিংহল- রাজের উপঢৌকনে পরিতুষ্ট হইয়া এবং সেই উপঢৌকনকে রাজকর স্বৰূপ গ্ৰহণ করিয়া, সমদ্র-গুপ্ত ভারতে বৌদ্ধ-মন্দির-নিৰ্ম্মাণের অনুমতি প্ৰদান কবেন। দূতগণ স্বদেশে প্রত্যাবৃত্ত হইয়া সিংহল-রাজ মেঘবৰ্ণকে তদ্বিষয় বিজ্ঞাপিত করেন । নানা জল্পনা-কল্পনার পর বোধিদ্রুমের সন্নিকটেই বিহার-নিৰ্ম্মাণ সাব্যস্ত হয় । কিছুদিন পরে বোধিদ্রুমের উত্তরে, সুদৃশ্য একটী ত্রিতল হৰ্ম্ম্য নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। মেঘবর্ণের তাম্র-শাসনে প্রকাশ-ত্রিতল সেই বিহারে ছয়টি সুবৃহৎ গৃহ ছিল । বিহারের তিনটী চুড়া বহুমূল্য রত্নাদিতে খচিত হইয়াছিল। আব্ব বিহারের চারি দিক ত্রিশ বা চল্লিশ ফিট উচ্চ প্ৰাচীরে বেষ্টিত ছিল । খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে হুয়েনৎ-সাং যখন ভারতে আগমন করেন, তখনও সে বিহার বিদ্যমান ছিল । ‘মহাযান’ শাখার স্থবির-সম্প্রদায়ের প্রায় সহস্ৰাধিক ভিক্ষু তখন সে বিহারে বাস করিতেন। সিংহল হইতে যে সকল যাত্রী আগমন করিতেন, বিহারে মহাসমাদরে তঁহাদের আতিথ্য-সৎকার করা হইত । সিংহল-রাজ কর্তৃক ভারতে বৌদ্ধ-বিহার নিৰ্ম্মাণ-ভারতে গুপ্ত-নৃপতিগণের শ্রেষ্ঠ রাজ নীতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ । ধৰ্ম্মে সমদর্শনই ইহার মুলীভুত। এই সমদৰ্শন-নীতিই গুপ্ত-দিগের প্ৰতিষ্ঠার মেরুদণ্ড-স্থানীয় 米

  • বুদ্ধগয়ার বৌদ্ধবিহার প্রতিষ্ঠা-সম্বন্ধে নিম্নলিখিত গ্ৰন্থ-পত্র দ্রষ্টব্য ; যথা,-“মহাবংশ’ (অন্ধবাসী) ;

ladian Antiquary, 902, P, 192 www.