পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । 89) সংসার যতই মায়ামোহে প্রলুদ্ধ হয়, পাপ-পন্ধে নিমজ্জিত হইতে যায়, মহাত্মগণের মহাবাণী তাহাকে ততই সাবধান করিয়া দেয় ,--মোহ-পঙ্ক হইতে উত্তোলন করিবার চেষ্টা পায় । শঙ্করাচাৰ্য্য প্রমুখ মহাপুরুষগণের মহাবাণী সংসারে যতই বিঘোষিত হইবে,–হৃদয়ে প্রবেশ করিবে, সংসার ততই পাপ-তাপ হইতে মুক্ত হইয়া শান্তিলাভে সমর্থ হইবে। সংস্কৃত-ভাষার অন্যান্ত বিবিধ গ্রন্থ । কেৰল কাব্য-মহাকাব্য-নাটক-উপাখ্যান প্রভৃতিতে সংস্কৃত-সাহিত্য যে পৃথিবীর অন্তান্ত সাহিত্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ আসন গ্রহণ করিয়া আছে, তাহা নহে ; সাহিত্যের সকল অঙ্গই ভারতবর্ষে পুষ্টিলাভ করিয়াছিল, সংস্কৃত-সাহিত্যের বিলুপ্তপ্রায় স্থতির মধ্যে ":" তাহার প্রমাণ দেদীপ্যমান রহিয়াছে। ভাবা কিরূপ বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, সংস্কৃত-সাহিত্যের ব্যাকরণ, অলঙ্কার-শাস্ত্র ও অভিধানগ্রন্থসমূহ সে নিদর্শন বক্ষে ধারণ করিয়া আছে । সংস্কৃত-ভাষায় যে প্রণালীতে ব্যাকরণাদি রচিত হইয়াছে, তাহাতে ভাষার "সৰ্ব্বাঙ্গপুষ্টিরই প্রমাণ দিতেছে । ব্যাকরণ, অলঙ্কার-শাস্ত্র প্রভৃতি যদিও ভাষার ভিত্তিস্থান-নির্দেশক ; কিন্তু ভাষা উন্নত পরিপুষ্ট হওয়ার পরই ব্যাকরণাদি রচিত হইয়া থাকে। ঐ সকল গ্রন্থমূলেই ভাষার প্রতিষ্ঠার পরিচয় পাওয়া যায়। সংস্কৃত-ভাষার ব্যাকরণ, অলঙ্কার-শাস্ত্র, অভিধান-সমূহ কত কাল পুৰ্ব্ব হইতে বিদ্যমান ছিল, কেহই তাহ নির্ণয় করিতে পারেন না। প্রাচীন বৈয়াকরণদিগের মধ্যে এখন পাণিনির পূর্ববর্তী কোনও বৈয়াকরণের পরিচয় পাওয়া যায় না। কিন্তু পাণিনির স্থত্রেই প্রকাশ আছে,— তাহার পূর্ববৰ্ত্তী আরও চৌষটি জন বৈয়াকরণের বিষয় তিনি অবগত ছিলেন। সে চৌষট্টি জন বৈয়াকরণের গ্রন্থের সন্ধান পাইলে, হয় তো তাহাদেরও পূর্ববৰ্ত্তী আরও কত বৈয়াকরণের সন্ধান পাওয়া যাইত। পাণিনির কাল-নির্ণয়েই এখন নানা জনের মস্তিষ্ক নানারূপে বিঘূর্ণিত হইতেছে। তদুল্লিখিত পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী চৌষট্টি জনের নাম-পরিচয় পাইলে, না-জানি তাহাদের কাল-নির্দেশে মস্তিষ্ক আরও কতদূর বিঘুর্ণিত হইত ! পাণিনির “অষ্টাধ্যায়ী স্থত্রে” তাহার পূৰ্ব্বতন নিম্নলিখিত আচাৰ্য্যগণের নামোল্লেখ আছে ; যথা—“অত্রি, আঙ্গিরস, আপিশলি, কঠ, কলাপী, কাশুপ, কুৎস, কৌণ্ডিন্স, কৌরব্য, কৌশিক, গালব, গৌতম, চরক, চক্রবর্শ্ব, ছাগলি, জাবাল, তিক্তিরী, পারাশৰ্য্য, পীলা, বক্র, ভারদ্বাজ, ভৃগু, মণ্ডুক, মধুক, যন্ধ, বড়বা, বরতন্তু, বশিষ্ঠ, বৈশম্পায়ন, শাকটায়ন, শাকল্য, শিলালী, শৌনক, স্ফোটায়ন ।” এখন কেবল ইহাদের নাম মাত্রই প্রাপ্ত হই ; কিন্তু শঙ্কালঙ্কার বিষয়ে ইহার। কি পাণ্ডিত্য প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তাহার কোনই তথ্য অবগত হওয়া যায় না। পাণিনির ব্যাকরণে বৈদিক ভাষার পরিবর্তন দেখা যায়। সুতরাং তাহার ব্যাকরণ-রচনার পূৰ্ব্বে বৈদিক বৈয়াকরণগণের বিদ্যমানতার বিষয়ও প্রতীত হয়। কিন্তু এখন পাণিনির সম্বন্ধেই নানা বিতর্ক উঠে ; সুতরাং উহার পূর্ববৰ্ত্তিগণ যে অন্ধকারে বিলীন হইবেন, তাহতে আর আশ্চৰ্য্য কি ? পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী-স্বত্র রচনা সম্বন্ধেই কত গল্প—কত কিংবদন্তী কত ভাবে প্রচলিত হইয়াছে, তাহার ইয়ত্তা নাই। মহেশ্বরের অনুগ্রহে পাণিনি অল্পধ্যায়ীস্বত্র-রচনায় সাফল্য লাভ করিয়াছিলেন, ইহাই সাধারণ মত । এক মতে প্রকাশ,—পঞ্জাব stätt