পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৫১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাষা ও সাহিত্য । 及》 এ উপমাও যথা-বিন্যস্ত বলিয়া মনে হয় না। যদি কখনও পৃথিবীর প্রধান প্রধান নাটকের সহিত কালিদাসের নাটকের তুলনায় সমালোচনার অবসর পাই, দেখাইব-কালিদাস কত মহান—কত গরীয়ান । পরবর্তি-কালের ভারতের প্রাদেশিক সাহিত্যের আলোচনায়ও ভারতের কত গৌরব-গরিমার নিদর্শন পাই । বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মের অভু্যদয়ে পালিতাষার মধ্য দিয়া সাহিত্যে যে অনুপম রত্নরাজি সজ্জিত হইয়াছে, তাহারই ব৷ তুলন। কোথায় ? সে সাহিত্যের মধ্যেও ভারতের পৃথিবী-ব্যাপী গৌরবের-ঐশ্বর্য্যের—প্রভাবের স্মৃতি বিজড়িত রহিয়াছে। সুদুর দাক্ষিণাত্যকে সাধারণতঃ প্রাচীন-কালের অসভ্য বর্বর দেশ বলিয়া অভিহিত করা হইয়া থাকে । কিন্তু দাক্ষিণাত্যের অভ্যস্তরে প্রবেশ করিলে, প্রাচীন দ্রাবিড়ী ভাষার অনুশীলন করিলেসে দেশের মহীয়সী মহিমার নিকট মস্তক অবনত করিতে হয়। আজিকালি দ্রাবিড়ী সাহিত্যের আলোচনায় কেহ কেহ বিস্ময়াবিষ্ট হইয়। বলিতেছেন,—“ভারতের সভ্যতার আদি-স্থান—হয় তো বা দ্রাবিড় ছিল । খৃষ্ট-জন্মের বহু শতাব্দী পূৰ্ব্বে দ্রাবিড়-দেশীয় বণিকগণ পৃথিবীর নান। স্থানে বাণিজ্য-ব্যপদেশে গতিবিধি করিতেন। শাস্ত্রে পঞ্চ-গৌড় ও পঞ্চ-দ্রাবিড় নামের উল্লেখ আছে। পঞ্চ-গৌড় আর্য্যাবৰ্ত্তে এবং পঞ্চ-দ্রাবিড় দাক্ষিণাত্যে প্রতিষ্ঠাপন্ন হইয়াছিল। সে ঘটনা কত কাল পূর্বে সংঘটিত হয়, তাহ নির্ণয় করিতে অনুসন্ধিৎসুগণের অনুসন্ধান প্রায়শঃই পর্যুদস্ত হইয়াছে। মধ্য-ভারতের বা আর্য্যাবর্তের সহিত বৈদেশিকগণের বাণিজ্য-সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হইলে, বহুদিন পর্য্যন্ত দ্রাবিড়-দেশে বৈদেশিক বাণিজ্যের সংশ্ৰব ছিল । বাইবেলোক্ত সলোমন রাজার রাজত্বকালে ফিনিসীয় বণিকগণ দ্রাবিড়-দেশে বাণিজ্য করিতে আসিতেন । সেই নিদর্শনের অনুসন্ধান পাইয়। পাশ্চাত্যপণ্ডিতগণ অনেকেই সমস্যা-সাগরে ভাসমান হইয়াছেন । ফলে, আর্য্যাবৰ্ত্তের সভ্যতার বিষয় বিস্মৃত হইয় তাহার এখন দাক্ষিণাত্যের দ্রাবিড়-দেশকে ভারতীয় সভ্যতার আদিক্ষেত্র বলিয়। সিদ্ধান্ত করিতেছেন। কোন প্রদেশের কথা কহিব ? এই বঙ্গ-দেশের পূর্ব-গৌরবের কাহিনী যদি স্মরণ করি, তাহ হইলেই বা কি দেখিতে পাই ? কেহ হয় তো বলিবেন,—“বঙ্গদেশ সেদিন মাত্র সাগর-গর্ভ হইতে উত্থিত হইয়াছে ; এ অপবিত্র দেশে আগমন করিলে প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন হইত ; এ দেশের আবার গৌরব-গাথা কি আছে ? * কিন্তু পুরাতত্ত্বের গবেষণায় এ উক্তি সমর্থিত হয় না । এই বঙ্গ-দেশ অপবিত্র, এ নির্দেশ শাস্ত্রকারগণ কখনই করেন নাই। যে স্থানে এরূপ বাক্যের সমাবেশ আছে, সে স্থান প্রক্ষিপ্ত বলিয়াও মনে হয় ; BBB BB BB B BB BB S BB BS BB BBBB BBBB BBBBBB BBBB BBB প্রতিষ্ঠিত হইয়া “বঙ্গ’ নাম প্রাপ্ত হইয়াছিল। মহর্ষি মকু আৰ্য্যাবর্তের যে বর্ণনা করিয়৷ গিয়াছেন, সে বর্ণনা-ক্রমে এক দিকে হিমালয় ও অন্য দিকে বিন্ধ্যাচল—এই দুই সমান্তরাল রেখা অবলম্বন করিয়৷ পূৰ্ব্ব-পশ্চিমে সমুদ্র পর্য্যন্ত অগ্রসর হইলে, বঙ্গ-দেশ কখনই সে গণ্ডীর বাহিরে পড়ে না। যে বঙ্গদেশ পরিপ্লাবিত করিয়া কলুবনাশিনী ভাগীরথী প্রবহমান, সে বঙ্গ কখনই পাপজনক হইতে পারে না। যে বঙ্গভূমে পীঠস্থান-সমূহ বিদ্যমান, বঙ্গদেশের অপবিত্রতার বিষয় ও তাহাব কারণ সম্বন্ধে "পৃথিবীর ইতিহাস" দ্বিতীয় খণ্ডে (২৪১ম পৃষ্ঠায় ) আমরা যাহা বলিয়াছি, তাহাও এতৎপ্রসঙ্গে বিচার করিয়া দেখা উচিত।